✍️কলমে: আশিস মিশ্র
(পর্ব –২৩)
পি কে বলতে বাঙালি কিংবদন্তি ফুটবলার ও কোচ পি কে ব্যানার্জিকেই জানে। দ্বিতীয় কোনো পি কে – র অস্তিত্ব সম্পর্কে মাথা ঘামানোর সময় কোথায়? শীতল হাওয়া কন্ঠে লেগেছে। নাক – মুখ ভার। বেড়ুবেড়ু মন এক পা সামনে দিয়ে দু’ পা পিছিয়ে আসছে। দুগ্গা,কালী,ধনতেরস,ছট,জগধাত্রী সব চলে গেছে। করোনার পালে নতুন হাওয়া লেগেছে, তাই সে আরও জাঁকিয়ে বসতে চায়। কিন্তু কে আর তাকে পাত্তা দিচ্ছে।
এই শুনছি ভ্যাকসিন আসছে,এই শুনছি কবে আসবে জানা নেই। এগিয়ে চলুন। কী আর করা যায়। অগত্যা কাব্য করার জন্য একটি হলুদ রবিবার খুঁজতে গিয়ে তেমন করে আর তাকে পাওয়া গেল না। তাকেও কারা যেন হাইজ্যাক করে নিয়ে পালিয়েছে।
মাঠময় সোনালী ধানের ক্ষেত। মাঝে মাঝে মেঘলা আকাশ। কাটা চাঁদ দেখতে দেখতে গোল হয়ে গেল। মনে পড়ে যায় — এখনো কি সেই রাস/ এখনও কি সেই পূর্ণিমা?
না, কোনো কিছুতেই আর মন বসছে না। কোথাও যেন বিশ্বাস হারানোর খেলা চলছে। বিশ্বাস। বিশ্বাস। সে বড়ো চতুর এখন।
তবুও মন ভালো করতে কয়েকজন মিলে একদিন নৌকোবিলাসে চললাম। তখন সেইদিনের মতো গোল চাঁদ নেই। শিরশিরে ঠান্ডা হাওয়ায় ভেসে চলল নৌকো। এপারে হলদিয়া, ওপারে নন্দীগ্রাম। কতো জল গড়িয়ে গেছে এই দুটি জনপদ দিয়ে। কতো ইতিহাস। রাজনীতি । রক্তপাত। এ খেলা চলছে নিরন্তর।
ওই যে বললাম, কাউকে আর বিশ্বাস করতেই পারা যায় না। বিশ্বাস করলেই বিপদ। কখন যে কে পেছন থেকে মারবে বোঝাই দায়। তাই ভয় হয়, আমাদের পরের প্রজন্মদের নিয়ে। তারা কী করবে? হাজার হাজার শিক্ষিত বেকার!
এ খেলা চলছে নিরন্তর। হাফটাইম একদিকে। হাফটাইম আর এক দিকে। গোল পোস্টে বল যে ঢোকাতে পারবে সেই হিরো। জীবনের খেলা এমনই। হাফটাইম একদিকে। হাফটাইম আর এক দিকে।
কেন জানি না, আজকাল এই সব ভাবতে ভাবতে চোখের কোণ ভিজে ওঠে। একটি খবরের কথা মনে পড়ে যায়। মারাদোনা অবসর নিলেন। ছোট একটি প্রতিবেদন। তাই আমাকে সেদিন কাঁদিয়ে দিয়েছিল।
নৌকো চলেছে। ওরা গান ধরেছে। ‘ মিলন হবে কতদিনে.. ‘।
না,বাঙালির সব রোমাঞ্চ, রোমান্টিকতা খেয়ে নিচ্ছে কতকগুলো বাঁদরের দল। আর তাদের খবর দেখতে দেখতে, পড়তে পড়তে মনে হয় সবাই মিলে তাড়া করি ওদের..।
গভীর গভীরতর রাত হয়ে এলো। মানুষের ঘুম কমে আসছে। বাঙালিরও। কী করে ঘুম আসবে বলুন। মগজ দখল করে নিয়েছে কেউ কেউ। এও এক নতুন সিস্টেম। মানুষের মগজ দখল করে নাও..।
চলবে…