নিজস্ব সংবাদদাতা: কয়েকদিন আগেই নাম না ধরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেচিকেন, পদ না থাকলে পৌরসভার গেটে আলু বেচতিস। চার চারটি পদ দেওয়া হয়েছে! ভাইরাল হওয়া একটি অডিও ক্লিপিংয়ে সুব্রত বক্সীর গলায় বলতে শোনা গিয়েছিল, ঘরে দুটি সাংসদ, এইচডিএর চেয়ারম্যান, আর কত পদ চাই? সেরকমই একটি পদ থেকে ইস্তফা দিলেন পরিবেশ ও সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
জানা গিয়েছে, হুগলি নদী ব্রিজ কমিশনারের (HRBC)চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেন শুভেন্দু অধিকারী। আর এরপরই জল্পনা আরও বাড়ল।
রামনগরের সভায় মন্ত্রী বলেছিলেন, “মিডিয়া ভাবছে আমি কিছু বলব। দল ছাড়ার কথা বলব কিন্তু আমি এখনও মন্ত্রী রয়েছি, দলে রয়েছি। দলে থেকে দলের বিরুদ্ধে কিছু বলা যায়না। আমি নীতি আদর্শে বিশ্বাস করি।’ স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে এবার কী তিনি বলার জন্যই প্রস্তুত হচ্ছেন? একের পর এক সরকারি পদ ছাড়তে চলেছেন?
জল্পনা আরও তীব্র হয়েছে আগামী ৩০শে নভেম্বর কলকাতায় অমিত শাহর সভাকে ঘিরে। কেউ কেউ বলছেন ওই সভাতেই অমিত শাহের হাত থেকে বিজেপির পতাকা নিতে পারেন তিনি আর তার আগে ২৭ তারিখের মধ্যে সব পদেই ইস্তফা দিতে পারেন তিনি। ২৬ তারিখের এই ইস্তফা তাই জল্পনা বাড়িয়ে দিল অনেকটাই।
যদিও অন্য একটি সূত্র দাবি করেছে অমিত শাহ নয় তিনি দলীয় পতাকা নেবেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে.পি নাড্ডার হাত থেকে এবং সেক্ষত্রে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে ১০ই ডিসেম্বরের মধ্যে। এদিকে নন্দীগ্রামে কিছুদিন আগেই এক পঞ্চায়েত প্রধান ও উপপ্রধান বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। আরো বেশ কিছু পদাধকারী, নির্বাচিত ব্যক্তিত্ব তৃনমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পথে। তার মধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুরের শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ নেতা সিরাজ খান বুধবার বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। সব মিলিয়ে শুভেন্দুর দল ছাড়ার সম্ভবনা প্রবল হচ্ছে।
শুভেন্দুর সঙ্গে শেষ বেলায় দৌত্যের ভার ছিল সাংসদ ও প্রবীণ তৃনমূল নেতা সৌগত রায়ের ওপর। দু’দফা আলোচনার পর তিনি বলেছিলেন, ‘দল সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ লড়াই করতে চায়। শুভেন্দু তৃণমূলে রয়েছে। তিনি গতকালও পরিবহণ দপ্তরে ছিলেন।’ তাঁর ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য, ‘দলের মধ্যে আমরা সবার সঙ্গে সদ্ভাব রক্ষা করতে চাই। এই চেষ্টায় কখনও সাফল্য আসতে সময় লাগে। কখনও তাড়াতাড়ি হয়।’ কিন্তু যেভাবে শুভেন্দু এদিন HRBC-র চেয়ারম্যান পদ ছাড়লেন, তাতে তাঁর ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক জীবন নিয়ে জোর জল্পনা শুরু হয়ে গেল।
এদিকে পরিবর্তিত পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে কেন্দ্রীয় বিজেপি। যদি শুভেন্দু বিজেপিতেই আসেন তবে মুকুল রায়, ভারতী ঘোষের মতই শুভেন্দু অধিকারী রাজ্য নেতৃত্ব নয়, সরাসরি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে সাযুজ্য রেখেই কাজ করবেন। দিলীপ ঘোষের নিয়ন্ত্রণে তিনি থাকবেনা। আপাততঃ শুভেন্দু অধিকারীর জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ থেকে একটি নিরাপত্তা বাহিনী মজুত করে রাখতে হবে। শুভেন্দু মন্ত্রিত্ব ও দল ছাড়ার সাথে সাথেই তাঁর নিরাপত্তার দায়িত্ব নেবেন তাঁরা। বাংলার মাটিতে এরপর দুই ‘যুবরাজ’য়ের লড়াই।