অশ্লেষা চৌধুরী: মালদার মানিকচক ঘাটে গঙ্গা নদীতে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। এখনও সন্ধান মেলেনি গঙ্গায় তলিয়ে যাওয়া আটটি লরির। খোঁজ মেলেনি লরিগুলির সাথে গঙ্গায় ডুবে যাওয়া দুইজন ব্যক্তিরও। এই ঘটনাতেও রাজ্যের শাসক দলের দিকে আঙুল তুলল গেরুয়া শিবির। অভিযোগ অস্বীকার তৃণমূল। শুরু হয়েছে নতুন করে রাজনৈতিক তরজা।
জানা গিয়েছে, নিখোঁজ ব্যক্তিদের নাম ময়না শেখ (৩৫) ও মন্টু শেখ (৪২)। তারা দুজনেই ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না লঞ্চের সিগনালের দায়িত্বে থাকা কর্মী তারাচাঁদ যাদবেরও। তবে তিনি জলে ডুবে যাননি বলেই সন্দেহ পুলিশের। তারও খোঁজ চালানো হচ্ছে বলে পুলিশ আধিকারিকরা জানিয়েছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় ঝাড়খন্ডের রাজমহল ঘাট থেকে মাল বোঝাই লরিগুলি নিয়ে মানিকচক ঘাটে এসে পৌঁছায় লঞ্চটি। লরিগুলি লঞ্চ থেকে নামানোর সময় পিছলে গিয়ে দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি গৌরচন্দ্র মণ্ডল।
তিনি বলেন, ‘ইতিমধ্যেই সিভিল ডিফেন্স, ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট দপ্তর ও এনডিআরএফ দল উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। লরিগুলি এখনও উদ্ধার করা যায় নি। তবে সবরকম ভাবে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। জলে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে ডুবুরি নামানো হয়েছে।‘
সোমবার রাত থেকেই উদ্ধার কাজ শুরু করে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থলে যান জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও পুলিস সুপার অলোক রাজোরিয়া। কিভাবে দুর্ঘটনা ঘটল ফেরি কর্তৃপক্ষের কাছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা নেন তাঁরা। সারাক্ষনই ঘটনাস্থলে রয়েছেন মানিকচক থানার ওসি গৌতম চৌধুরি সহ বিরাট পুলিশ বাহিনী। মঙ্গলবার দুপুরে দুর্ঘটনা স্থল পরিদর্শন করেন মালদার ডিভিশনাল কমিশনার এস এ বাবা।
দুর্ঘটনার পরের দিন অর্থাৎ আজ মানিকচকে যান বিজেপি নেতারাও। বিজেপি নেত্রী শ্রীরূপা মিত্র, বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ মন্ডল রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনকে দোষারোপ করেন। শ্রীরূপা মিত্র বলেন, ‘রাজ্য সরকার মানিকচক ঘাটকে অবহেলা করেছেন। নজরদারির অভাব আছে। ওভার লোডিং গাড়ি পারাপার করা হয় বেশির ভাগ সময়। ঘাটের অবস্থা খুব খারাপ। রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন দুর্ঘটনার দায় এড়াতে পারেন না।‘
গোবিন্দ মন্ডল বলেন, এই ঘাটগুলির টেন্ডার প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ভাবে হয় না। মানিকচক ঘাট দিয়ে অনেক মানুষ পারাপার করেন। ঘাটের বেহাল দশা। এই সব নিয়ে বিজেপি আন্দোলন করবে।‘বিজেপির অভিযোগ উড়িয়ে দেন গৌড়চন্দ্র মন্ডল। তিনি বলেন, ওভার লোডিং গাড়ি পারাপারের অভিযোগ নেই। এই ঘাটটি গঙ্গার অসংরক্ষিত এলাকায় আছে। প্রতি বছর বর্ষায় এই ঘাটটা গঙ্গার জলে ডুবে যায়। তাই সংস্কার করা সহজ না।জেলাশাসক বলেন, লরিগুলি উদ্ধার করার কাজ চলছে। দুইজন নিখোঁজ আছে। তাদের খোঁজ করা হচ্ছে।