ওয়েব ডেস্ক: কোনো জটিল রোগও হলে ভেলোরে গেলেই নাকি সুস্থ হয়ে যাবে রোগী। ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ বা সিএমসি–র যেমন জগৎ জোড়া নাম তেমনি, এখানে গেলে জটিল থেকে জটিলতর রোগও সুস্থ হয়ে যাবে এক নিমেষে, বহুদিন ধরে একথাই বিশ্বাস করে আসছেন দেশের বহু সাধারণ মানুষ। তবে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ বা ভারতের অন্যান্য রাজ্য নয়, একইসাথে বাংলাদেশের বহু মানুষ প্রতিদিন ভালো চিকিৎসার আসায় ভেলোরে যান। কিন্তু রোগী সুস্থ হওয়ার ভরসা থাকলেও দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বহু মানুষ টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে আসতে পারে না। তবে এবার সেই ভেলোরের সিএমসি-তেই একেবারে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পেতে চলেছেন পশ্চিমবঙ্গবাসী। তবে শুধুমাত্র ভেলোরের সিএমসি-তেই নয়, একই সাথে বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পাওয়া যাবে দেশের সবচেয়ে বড় চিকিৎসাকেন্দ্র দিল্লি এইমসেও। তবে এই সুবিধা যে সকলের জন্য তা কিন্তু নয়, শুধুমাত্র যাঁরা পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য প্রকল্প ‘স্বাস্থ্যসাথী’র আওতাভুক্ত, শুধুমাত্র তাঁরাই এই সুযোগ-সুবিধা পাবেন।
এবিষয়ে শনিবার রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক বলেন, “সম্প্রতি ভেলোরের সিএমসি ও দিল্লি এইম্স- এই দুটি বড় প্রতিষ্ঠান ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পে তালিকাভুক্ত হয়েছে। রাজ্যের হাজার হাজার মানুষ প্রতি বছর চিকিৎসার জন্য এই দুটি প্রতিষ্ঠানে যান। আমরা দেখেছি যে সেখানে গেলেও বিপুল পরিমাণ খরচের জন্য অনেকেই বেশি দিন চিকিৎসা করাতে পারেন না। সে সব পর্যবেক্ষণ করেই আমরা এই দুটি হাসপাতালকে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যা ইতিমধ্যে করা হয়ে গিয়েছে।”
এদিন ওই স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, ইতিমধ্যেই রাজ্যের প্রায় প্রতিটি বাসিন্দাই রাজ্য সরকারের ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ডের অন্তর্ভুক্ত। সে অনুযায়ী, যাঁরা ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতায় রয়েছেন তাঁরা প্রত্যেকে দিল্লির এইমস ও ভেলোরের সিএমসি এই দুটি হাসপাতালে গিয়ে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা নিতে পারবেন। তবে শুধুমাত্র ভেলোর কিংবা দিল্লি নয়, ইতিমধ্যেই এই রাজ্যের প্রত্যেকটি সরকারি এবং বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পের আওতাভুক্ত লোকজন বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা পান। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল ভেলোরের ক্রিশ্চিয়ান মেডিক্যাল কলেজ ও দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেসও।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতায় আসার ৫ বছর পর ২০১৬ সালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্পটি চালু করেছিলেন। সে অনুযায়ী ইতিমধ্যেই এই প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত এরাজ্যের প্রায় ১১ লক্ষ ৭০ হাজার বাসিন্দা। তারা রাজ্যের ১৫০০-র বেশি হাসপাতালে সারাবছর ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিনামূল্যে চিকিৎসার সুবিধা পান। তবে এই ‘স্বাস্থ্যসাথী’ কার্ড প্রধানত পরিবারের মহিলাদের নামেই হয়। তবে কার্ডটি যার নামে অন্তর্ভুক্ত থাকবে তাঁর বাবা–মা কিংবা শ্বশুর–শাশুড়িরা কেউই এই প্রকল্পের সুবিধা পাবেন না। তবে এই প্রকল্পের আওতাভুক্ত হতে গেলে রাজ্যবাসীকে কোনওরকম টাকা দিতে হয়না।