নিউজ ডেস্ক: তিন বছর আত্মগোপন করে থাকার পরে ২১ অক্টোবর কলকাতায় আত্মপ্রকাশ করেন বিমল গুরুং। ঘোষণা করেন তৃণমূলকে সমর্থনের কথাও। তার পরদিন থেকেই পাহাড়ে বিমলের সমর্থনে তাঁর সমর্থকেরা সরব হতে থাকেন। পাশাপাশি বিমল বিরোধী সুরও গর্জে ওঠে। গতকালও বিনয় পন্থীরা কারশিয়াং ও মিরিকে বিশাল মিছিল করে, বিমল গুরুং গো ব্যাক স্লোগানে গর্জে ওঠে পাহাড়। বিমল-বিনয় সংঘাতে যেন আগুন জ্বলছে পাহাড়ে।
তাই এবার বিমল-বিনয় সংঘাতের আগুনে জল ঢালতে নড়েচড়ে বসলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্নে ডেকে পাঠালেন বিনয় তামাং, অনীত থাপাকে। আগামী মঙ্গলবার অর্থাৎ ৩ নভেম্বর তাঁদের ডাক পড়েছে বলে খবর। ইতিমধ্যেই বিমল বিরোধী সভা–সমাবেশে উত্তপ্ত।
তিন বছর আড়ালে থাকার পর বিমল গুরুং পঞ্চমীর দিন হঠাৎ করেই উদয় হন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সমর্থন করবেন, এই ঘোষণা করে তিনি রাজনীতির পরবর্তী ইনিংস শুরু করার ভূমিকা দিয়ে রাখলেন। আর ঠিক তারপর থেকেই বিনয় তামাং–অনীত থাপা গোষ্ঠী বিমল গুরুংয়ের বিরোধিতা করে নানারকম বার্তা দিচ্ছেন। পাহাড়ে বের করছেন শান্তি মিছিল। শনিবারই এরকম একটি মিছিল ছিল। এই পৃথক রাজনীতির পাহাড়ে যাতে আর আগুন জ্বলে না ওঠে তাই এই উদ্যোগ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিনয় তামাং–অনীত থাপা গোষ্ঠী বিমলকে নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছে। কারণ তাঁরা অশান্ত পাহাড়কে শান্ত করেছিলেন। আর এখন বিমল এসে লাভের গুঁড় খেয়ে নেবে তা তাঁরা কখনই হতে দিতে চান না। তাই পাহাড়জুড়ে বিমল বিরোধী আওয়াজ তোলা শুরু হয়েছে। যদিও বিমল–উত্তর নতুন পরিস্থিতিতে মমতা পরিষ্কার করে দিয়েছেন, পাহাড়ের প্রশাসনিক প্রধান বিনয়ই।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এখন সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে পাহাড়ে শান্তি বজায় রাখা এবং সেখানের ভোট ব্যাঙ্ক ফিরে পাওয়া। কারণ সামনেই ভোট। সেখানে বিমলের নিজস্ব সমর্থকের সংখ্যাটা কম নয়। যা ভোট–অঙ্কে সুবিধায় রাখবে তৃণমূলকে। আর সবদিক ভালোভাবে সামলাতে গেলে ঠিক রাখতে হবে পাহাড়কে। কিন্তু বিমল–বিনয় সংঘাতে শৈলশহরে সেই হাসি ফুটবে না বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। তাই বিবাদমান এই দুই গোষ্ঠীকে মিলিয়ে দেওয়ার চেষ্টাই করছেন তৃণমূল সুপ্রিমো বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তার প্রথম ধাপ হিসেবে সম্ভবত বিনয় তামাংকে নবান্নে ডেকে পাঠালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।