ভীষ্মদেব দাশ, খেজুরিঃ ‘২০১১সালের নির্বাচনে মানুষ তৃণমূলকে পছন্দ করতে চেয়েছিল। তাই স্বতঃস্ফুর্ত ভোট দিয়েছিল তৃণমূলকে। তারপর গণতন্ত্রকে খুন করেছে তৃণমূল, মানুষের বিশ্বাস নষ্ট করেছে। ভোট দিতে বাধা, বুথে বুথে ছাপ্পা, দুর্ণীতিতে যুক্ত পিসি-ভাইপো। মুখ্যমন্ত্রী চিটফান্ড মালিকদের থেকে টাকা নেন। আর প্রধাননমন্ত্রী আদানি, আম্বানিদের থেকে।’ এভাবেই শুরু করেছিলেন বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী। মাঠ ঘাট আল বেয়ে তখনও মানুষ আসছেন। কেন্দ্রের সদ্য পাশ হওয়া কৃষি বিল আর রাজ্য সরকারের বিরোধিতায় লাল ঝান্ডার সুনামি বয়ে গেল খেজুরিতে। যে খেজুরিতে প্রায় একদশক লাল পতাকাই দেখেনি মানুষ।
চক্রবর্তী বলছিলেন, কেন্দ্রের কৃষি বিলে মেহনতি কৃষকদের সর্বনাশ হবে। এই বিল চায় না মেহনতি কৃষকরা। ২০১১সালের আগে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য থেকে বড় নেতাদের কত সম্পত্তি ছিল, ২০২০সালে সম্পত্তির পরিমাণ কত হয়েছে জবাব চায় লাল ঝান্ডা।’ ভোটের আগে সরকারির চাকরির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে তৃণমূল, বিজেপি সরকার আজও বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি দিতে পারেননি। বাংলা তথা দেশের মহিলারা নির্যাতিত হচ্ছেন, ধর্ষিত হচ্ছেন। মহিলাদের নিরাপত্তা দিতে ব্যার্থ রাজ্য ও কেন্দ্র সরকার। মুখ্যমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে এমনই বললেন সিপিআইএম কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা সুজন চক্রবর্তী।
তিনি আরও বলেন, রাস্তার ধারে লাইটপোস্টে ঝুলতে দেখা যেত (মুখ্যমন্ত্রী) আপনার ছবি, তাতে লেখা থাকত সততার প্রতীক। সেই ছবি এখন আমার চোখে পড়েনা। চ্যালেঞ্জ করছি এখন ছবিগুলো লাগান। করোনা আবহে কর্মহীন মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে লাল ঝান্ডা। সিপিআইএম নেতা-কর্মীরা কৌটো নিয়ে ভিক্ষা করে সাধারণ মানুষের দুর্দিনে পাশে দাঁড়ায় এটাই লাল ঝান্ডার গর্ব। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী চিটফান্ড মালিকদের দিকে কৌটো বাড়ন। প্রধানমন্ত্রী আদানি, আম্বানিদের সামনে কৌটো ধরেন।
তিনি আরও বলেন, ২০১১সালে যাঁদের দেখে তৃণমূলকে ভরসা করেছিলেন তাঁরাই আজ দলচ্যুত। আর তৃণমূলের ছাঁটাই রাই এখন বিজেপির নেতা। তৃণমূল-বিজেপির দুর্ণীতি রুখতে মেহনতি মানুষের ভরসা এখন লাল ঝান্ডা। সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে লড়াইয়ে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান সুজন চক্রবর্তী।
মঙ্গলবার খেজুরি-২ ব্লকের বিদ্যাপীঠ থেকে জনকা পর্যন্ত মহামিছিলে যোগ দেন কয়েক হাজার বাম সমর্থক। লাল ঝান্ডা হাতে নিয়ে দীর্ঘ মহামিছিলে দেখা গেল উচ্ছ্বসিত বাম কর্মীদের ভিড়। দীর্ঘ কয়েকবছর পর লালে লাল হল একসময়ের বাম দুর্গ খেজুরি। মঙ্গলবার মহামিছিলে যোগ দেন সুজন চক্রবর্তী, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সিপিআইএম পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতি নিরঞ্জন সিহি, রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস, যুবনেতা পরিতোষ পট্টনায়েক, বিধায়ক ইব্রাহিম আলি সহ খেজুরির সিপিআইএম নেতৃত্ব। খেজুরির সিপিআইএম নেতা তথা রাজ্য কমিটির সদস্য হিমাংশু দাস বলেন, তৃণমূলের সন্ত্রাসকে উপেক্ষা করে হাজার হাজার বাম সমর্থক মিছিলে সামিল হন। শ্রমিক, ক্ষেতমজুর, যুবক, যুবতী মহামিছিলে পা মেলাতে দেখা যায়।