✍️কলমে: কাজী রুনালায়লা খানম
খোলামকুচি জীবন
এই যে চোখের ওপর জেগে আছে আদিগন্ত মাঠ,
এইখানে কোনো একদিন প্রথম শস্যের বীজ বুনে গেছে কোনো এক মাঠের ঈশ্বর
পূর্বজের হাতের তালুর ঘ্রাণ বুকে করে বয়ে এনে
এইখানে রেখে গেছে ফসলের সুখ,
প্রাচীন পুরুষ এক প্রিয়তর নারীটিকে নিয়ে অইখানে বেঁধেছিলো মায়াময় ঘর।
অথচ কী অবলীলায় তাদের হাতেই তুমি
বিষপাত্র তুলে দাও!
দূরত্বের সীমায় দাঁড়িয়ে সেইসব মানুষের বারমাস্যা লিখে চলে দীর্ঘাঙ্গী গাছেরা
আশ্বিনের বৈকালিক মাঠ এখানে নিয়ম করেই একতারা বাজায়,
বৈষ্ণবীর আঁচল হয়ে উড়ে যায় পালকরঙা মেঘ
দুচোখে কাপড় বেঁধে ডানদিকের বুকপকেটে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে খুঁজতে …
কখন যে খোলামকুচি হয়ে গেলো জীবন
লোকটা ঘূণাক্ষরেও টের পেলে না!
২.
ভালোবাসার উল্টোপিঠে অভিমানের বসত
আমার পায়ের তলায় একটা বিষণ্ণ নদী শুয়ে আছে
চারদিকে ছড়ানো অজস্র মৃত ঢেউ আর
শুকনো পাতার সংসার।
অথচ কী অদ্ভুত দক্ষতায় তুমি জন্মদিন নামাঙ্কিত একটি নিটোল সাঁকো এঁকে দিলে!
আর অভিধানের পাতা হতে কিছু শব্দ উড়ে গেলো আশ্চর্য ক্ষিপ্রতায় অনির্দেশের দিকে
জারুলের পাতায় পিছলে পড়ছে শ্রাবণের চাঁদ
তুমি নৈকট্য মেপে নিচ্ছো স্পর্শের পারদে।
আমরা আসলে পরস্পরের কাছে
দীর্ঘ হতে দীর্ঘতর ছায়া
যতোদূর হাঁটি লীন হয়ে থাকি
বৃষ্টিবাদল, প্রখর রোদেলা দিন
এবং আমরা ফুলের সাথে গন্ধটুকুর মতো
নদীর সাথে মগ্ন ঢেউ- এর মতোই পরস্পরে বাঁচি
দূরত্বকে দূরে রেখে আরো নিবিড়, আরোও কাছাকাছি
অথচ তুমিও জানো ভালোবাসার উল্টোপিঠেই অভিমানের বসত।