নিজস্ব সংবাদদাতা: পুজোর সময় মেদিনীপুর শহরবাসীর জন্য বড়সড় উপহার ঘোষনা করল পুরসভা। অক্টোবর মাসের মধ্যে পুর কর মিটিয়ে দিলে বকেয়া কর বাবদ ধার্য জরিমানার অর্ধেক মুকুব করে দেওয়া হবে জানালেন পুর কর্তৃপক্ষ। লক ডাউনের ফলে গত মার্চ মাস থেকে পুর কর দিতে পারেননি এমন বহু মানুষ এর দ্বারা উপকৃত হবেন বলেই মনে করছে পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার হিসাব অনুযায়ী মেদিনীপুর শহরে ৪২ হাজার মানুষ রয়েছেন যাঁরা পুরসভাকে সম্পত্তি কর প্রদান করে থাকেন। লকডাউন ও অতিমারি সঙ্কটের দরুন অন্তঃত ২৪ হাজার মানুষ পুরকর দিতে পারেননি। পুর কর্তৃপক্ষের ধারনা এই বড় অংশের মানুষ উপকৃত হবেন এই ঘোষনায়।
কিন্তু শুধু এখানেই বিষয়টা সীমাবদ্ধ নয়। এমনটা নয় যে শুধু মার্চ মাস থেকে যারা কর দেননি তারাই এই ছাড় পাবেন বরং সময় সীমা আরও পিছিয়ে পুর কর্তৃপক্ষ বলেছেন গত দু থেকে তিনবছর ধরে পুর কর মেটাননি এমন ব্যক্তিরাও এই সুযোগ নিতে পারবেন। যার অর্থ এবছরের অক্টোবরের মধ্যে কর মিটিয়ে দেবেন এমন ব্যক্তিরা ধার্য জরিমানায় বিপুল সংখ্যক ছাড় পাবেন।
পুরসভা সূত্রে জানা গেছে পৌরসভার অধীনে কর্মরত প্রায় ৭০০ জন অস্থায়ী কর্মীকে তাঁদের প্রাপ্য মজুরি মিটিয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ৭০০ জনের ১০০জন কর্মী লকডাউন চলাকালীন শহরবাসীকে পরিষেবা দিয়ে এসেছে। উল্লেখ্য পুরসভার কর্মীদের মজুরি ও বেতন বাবদ প্রতিমাসে ৪০লক্ষ টাকা ব্যয় হয় যার ৮৫% দেয় রাজ্য সরকার। বাকি অংশ পুরসভাকেই মেটাতে হয়। অর্থাৎ প্রতি মাসে পুরসভাকে ৬ লক্ষ টাকা ব্যয় করতে হয় কর্মচারীদের মজুরি দেওয়ার জন্য। পুরসভার এই ব্যয়ের একটি বড় অংশই আসে সম্পত্তি কর থেকেই।
মেদিনীপুর পুরসভার অন্তর্গত ২৫টি ওয়ার্ডের অধীনে থাকা ৪২ হাজার সম্পত্তির মালিক ছাড়াও ৬ হাজার ব্যবসায়ী রয়েছেন যাঁদের একটা বড় অংশই এবার ব্যবসায়িক কর বা ট্রেড লাইসেন্স ফিজ প্রদান করে থাকেন। পুর কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন এই ৬ হাজার ব্যবসায়ীর ৪হাজার ব্যবসায়ী এবছর সেই ফিজ দিতে পারেননি। জানা গেছে সম্পত্তি কর এবং ব্যবসায়িক কর বাবদ মোট বকেয়ার পরিমান ১০কোটি টাকা।
পুরসভার এক আধিকারিক জানালেন, ” যদি অক্টোবর মাসের মধ্যে যাঁরা তাঁদের জন্য ধার্য সম্পত্তি কিংবা ব্যবসায়িক কর মিটিয়ে দেন তবে তাঁদের বকেয়ার জন্য যে জরিমানা নির্ধারিত হয়েছে তার অর্ধেক মুকুব করে দেওয়া হবে। তবে আইনগত বাধা থাকায় সম্পুর্ন জরিমানা মুকুব করা সম্ভব হবেনা।”
” আমরা জানি এই অতিমারি সময়ে, দীর্ঘ লকডাউন পেরিয়ে আসা মানুষের অনেকেই চাইবেন যাতে জরিমানা পুরোপুরি মুকুব করা হয় কিন্তু বাস্তবে সেটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।” জানিয়েছেন দায়িত্ব প্রাপ্ত পুর প্রশাসক তথা মেদিনীপুর মহকুমা শাসক দীননারায়ন ঘোষ।
এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন শহরবাসীদের অনেকেই। তাঁদের বক্তব্য, জরিমানার পুরো অঙ্কটাই মুকুব করলে খুবই ভাল হত কিন্তু তার মধ্যেও যে ছাড় পাওয়া যাচ্ছে তাও যথেষ্ট। শহরবাসী ও ব্যবসায়ীদের অনেকেই এই সুযোগ নিতে শুরু করেছেন বলেই জানা গেছে।