অচিন্ত্য ত্রিপাঠী : শনিবার বিকেল থেকে দফায় দফায় বৃষ্টিতে ভাসল খড়গপুর ও মেদিনীপুর শহর। গত কয়েক দিনের গরম কাটিয়ে এই ভরা বৃষ্টিতে কিছুটা হলেও প্রাণ জুড়ালো দুই শহরেরই। এদিন সকাল থেকেই মুখ ভার ছিল কাঁসাই উপত্যকার এই দুই শহরের। মাঝে মধ্যে চড়া রোদ উঠলেও মোটের ওপর আকাশ ছিল মেঘলাই। অবশেষে বিকাল সাড়ে চারটা নাগাদ কালো মেঘে ঢেকে ফেলে খড়গপুরের আকাশ। মুহূর্তের মধ্যে অন্ধকার হয়ে যায় চারদিক। অনেকেই ঘরের মধ্যে আলো জ্বালতে বাধ্য হন।
আমাদের খড়গপুর সংবাদদাতা জানিয়েছেন অন্যসময় দেখা যায় শহরের এক অংশে বৃষ্টি হলেও অন্য অংশ শুকনো খটখটে থাকে। শুক্রবার তার ব্যতিক্রম হয়েছে। এদিন ইন্দা, কৌশল্যা, বারবেটিয়া থেকে ঝাপেটাপুর হয়ে আইআইটি, প্রেমবাজার, তালবাগিচা যেমন বৃষ্টি ঝরেছে। তেমনই অন্যদিকে খরিদা,মালঞ্চ নিমপুরাতেও বৃষ্টি হয়েছে সমানতালে। বসতি এলাকা তো বটেই জলে ভেসেছে গোলবাজার, গেটবাজার থেকে শুরু করে সমস্ত বাজার এলাকাই। শহরের প্রায় সর্বত্রই রাস্তা ঘাট জলে থই থই। বিকাল সাড়ে চারটা থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি হয়েছে রাত প্রায় সাড়ে আটটা অবধি।মেদিনীপুর শহরে এদিন বৃষ্টির আবহ তৈরি হয়েছিল পৌনে চারটে নাগাদ। তবে সাড়ে সাতটা আর পৌনে ন’টা নাগাদ দু’দফার বৃষ্টিতে ছত্রখান হয়ে গেছে মল্লিকচক, বড়বাজার থেকে শুরু করে সাহাভড়ং বাজার অন্য দিকে কালেক্টরি থেকে কেরানিতলা পুজোর বাজার চৌপাট হয়ে গেছে। মানুষকে ছুটে দৌড়ে আশ্রয় নিতে দেখা গেছে দোকানের ভেতরে। মরসুমের প্রথম পূজার বাজার চৌপাট করে দিয়েছে বৃষ্টি। আমাদের মেদিনীপুর সংবাদদাতা জানিয়েছেন, বৃষ্টির জেরে বটতলা থেকে গোলকুয়াচক আর বিপরীত দিকে ভীমচক হয়ে স্কুলবাজার, জগন্নাথ মন্দির নিমেষে ফাঁকা হয়ে যায়। সন্ধ্যাবেলাতেই খাঁ খাঁ করতে থাকে পুরো বাজার।
আবহাওয়া দপ্তর বলছে এই অবস্থা চলতে পারে আগামী রবিবার অবধি। কারন একদিকে যেমন দক্ষিন পশ্চিম মৌসুমী বায়ু ওড়িশার ওপরে অবস্থান করছে। অন্যদিকে, শুক্রবার থেকেই আন্দামান সাগর ও আশেপাশের অঞ্চলে নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যা ইতিমধ্যেই পূর্ব মধ্য বঙ্গোপসাগর থেকে পশ্চিম উত্তর পশ্চিম দিকে এগোচ্ছ। এর জেরে ওড়িশা ও অন্ধ্র উপকূলে সোমবার নাগাদ বৃষ্টি ও ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যা ‘গতি’ নামে পরিচিত। এর জেরে অন্ধ্র সরকারের তরফে সমুদ্রে লাল সতর্কতা জারির সম্ভাবনা রয়েছে। অন্যদিকে একটি ঘূর্ণাবর্ত দক্ষিণ উপকূল অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে হিমালয় সংলগ্ন পশ্চিমবঙ্গ পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ফলে এই নিম্নচাপের প্রভাব সরাসরি বাংলায় না পড়লেও সামান্য বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী রবিবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে আপাতত ভারী বৃষ্টির কোনও সম্ভাবনা না থাকলেও দক্ষিনের জেলাগুলির বেশ কিছু অঞ্চলে হাল্কা বৃষ্টি হতে পারে৷
ছবি: প্রতিবেদক