Homeহেঁসেলিয়ানাহেঁসেলিয়ানা : জিরা রাইস ও রায়তা।। ঝিমলি ব্যানার্জী (দে )

হেঁসেলিয়ানা : জিরা রাইস ও রায়তা।। ঝিমলি ব্যানার্জী (দে )

2রা অক্টোবর.. গান্ধীজির জণ্মবার্ষিকী।
তারওপর শনিবার -রবিবার নিয়ে টানা 3দিন। কিন্ত কাজের ব্যস্ততায় ছুটিটা খেয়াল করেনি ঝিমলি। ডি এ ভি স্কুলে উ কেজিতে পড়া 5বছরের ছোট্ট মেয়েটা কে সকালবেলায় হোয়াটস্যাপ অনলাইন ক্লাসে গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষে সাজিয়ে ভিডিও পাঠতেই ব্যাস্ত ছিল সে। আজকালকার ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল গুলো পুচকে বাচ্ছা গুলো কেও সারাদিন ব্যস্ত রাখার ব্যবস্থা করে ফেলেছে, সঙ্গে মা দেরও। সব ঝামেলা মিটতে সারাদিন গড়িয়ে গেল। রাতে খেয়াল হলো, কাল ও পরশু ছুটি। ফেসবুকে খুললেই চোখে পড়ছে, করোনা র ভ্রূকুটি উপেক্ষা করে বন্ধুদের হঠাৎ করে বেরিয়ে পড়ার ছবি। ইচ্ছে করে, কিন্তু ছোট্ট বাচ্ছাটা নিয়ে বেরোতেই ভয় করে। রাতে ডিনার শেষে স্বামী অভিষেক কে সাহস করে বলেই ফেললো, কাল পরশু 2দিন ছুটি.. চলো না, একটু মন্দারমণি ঘুরে আসি। অভিষেক আঁতকে উঠলো। পরে অবশ্য ভেবে বললো,সমুদ্রে র কোথাও একটা ফাঁকা বিচ দেখে কিছুটা সময় কাটিয়ে আসা যায়। তবে শর্ত একটাই, বাইরের কোনো খাবার খাওয়া চলবেনা, রাস্তায় কোথাও দাঁড়ানো চলবেনা। ঝিমলি রাজি হয়ে গেল। বাচ্ছা কে ঘুম পাড়িয়ে রান্না ঘরে এল। সক্কাল সক্কাল উঠে কিছু একটাই বানিয়ে বেরিয়ে পড়তে হবে.. অনেকটা রাস্তা। কিন্তু chat জলদি কি বানানোও যায়? পেট ও ভরবে, সময় ও বাঁচাতে হবে। তাই তাকিয়ে দেখলো ভাঁড়ারে কি আছে। বাসমতি চাল মজুত, কিন্তু কাজু কিসমিস নেই.
যাহ, তাহলে ফ্রাইড রাইস বানানো হলোনা। ফ্রীজে মাংস ও রাখা নেই। যদিও মাংস বানিয়ে নিয়ে যেতে গেলে প্রচুর সময় লেগে যাবে। পরক্ষনেই মাথায় বুদ্ধি খেলে গেল ঝিমলির। হাতের কাছে, গোটা জিরে, পিয়াজ, বাসমতি রাইস গুছিয়ে রেখে, বাচ্ছার জন্য কেক, বিস্কুট ব্যাগ এ ভরে ঘুমোতে গেল।
সকালে উঠে চা গলায় ঢেলে নিয়ে ঝটপট, মাত্র 15মিনিটে ই বানিয়ে ফেললো ঝামেলা হীন জিরা রাইস ও রায়তা। লাঞ্চ র জন্য সেরা আর পেট ও মন ভরার জন্য যথেষ্ট।
আসুন, বানানোর আগে উপকরণ গুলো দেখে
নিই।


উপকরণ : বাসমতি চাল, গোটা জিরে, তেজপাতা, শুকনো লঙ্কা, লবঙ্গ, গোলমরিচ গুঁড়ো, নুন ও কুচোনো পিঁয়াজ, ডিম।
রায়তা র জন্য টক দই, শশা, পেঁয়াজ,সৈন্ধব্য লবন বা বিটনুন।

প্রণালী: একটি পাত্রে জল ফুটতে দিলাম, ফুটন্ত জলে এক চামচ রিফাইন অয়েল, 1/2টি তেজপাতা পাতা দিয়ে দিলাম। এক কাপ চাল (2 জনের জন্য ), ভালো করে ধুয়ে নিয়ে ফুটন্ত জলে ফেলে দিলাম। আট থেকে দশ মিনিটের মধ্যেই চাল ফুটে সরু লম্বা ভাত হয়ে গেলে, জল ঝরিয়ে নিন। একটি ননস্টিক কড়াই বা সাধারণ কড়াই এ 3/4চামচ রিফাইন অয়েল দিলাম। তেল গরম হলে 3চামচ মতো গোটা জিরে দিলাম, তারপর এক এক করে তেজপাতা, লবঙ্গ, শুকনো লংকা ও কুচোনো পেঁয়াজ দিলাম। ফোড়ন গুলো সামান্য লাল ভাজা হলে সেদ্ধ করে রাখা বাসমতি রাইস একটু একটু করে কড়াই এ দিতে থাকবো, ও সঙ্গে নুন ও গোলমরিচ গুঁড়ো দিতে থাকবো। সামান্য নাড়াচাড়া করে ঢাকা দিয়ে দিলাম। ডিম ফেটিয়ে ননস্টিক প্যান এ ভুজিয়া করে রাইস এ মিশিয়ে দিলাম (নিরামিষ খেতে চাইলে ডিম মেশানোর দরকার নেই )তৈরী হয়ে গেলো জিরা রাইস। কেও যদি ঘি র স্বাদ পছন্দ করেন, কোলেস্টরেল র সমস্যা নেই, তাহলে নাবানোর আগে এক চামচ ঘি, ও এল চিনি দিতে পারেন। তবে জিরা রাইস নোনতা খেতেই বেশি ভালো। হাতের কাছে ধনেপাতা থাকলে তাও কুচিয়ে দিতে পারেন।

রায়তা 
রায়তা র জন্য লাগবে 200গ্রাম মতো দই, একটি শশা, একটি ছোট পিয়াজ, বিটনুন।
একটি পাত্রে টক দই ঢেলে নিন। চামচে করে ফেটিয়ে নিন। শসা গ্রেডারে ঘষে, মিহি কাথ টি এবং পেঁয়াজ কুচো করে দই এ মিশিয়ে দিলাম। পরিমান মতো বিটনুন দিয়ে ফেটিয়ে দিলাম। তৈরী হয়ে গেলো দই, শসা, পেয়াঁজ সহযোগে রায়তা।
মাত্র 15/20মিনিটেই তৈরী করে ফেললাম, জিরা রাইস আর রায়তা। ক্যাসারোলে ভরে। বোতলে জল, ফ্লাস্কে চা ভরে নিয়ে গাড়িতে উঠে পড়লাম.. গন্তব্য মন্দারমণি। সারাদিন নির্জন সমুদ্রে র বিচে ঘুরে, দুপুরে বিচে মাদুর বিছিয়ে বসে ঘরে বানানো জিরা রাইস র রায়তা খেয়ে মন ভরে গেলো। আপনারাও বানিয়ে ফেলুন এইধরণের চট জলদি খাবার, যা সময় বাঁচায় আর মুখে স্বাদ ও আনে।

RELATED ARTICLES

Most Popular