নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বামী-স্ত্রীর গন্ডগোল, স্ত্রীকে মারধর তাই রাগে অভিমানে সন্ধ্যাবেলায় বাপের বাড়ি চলে গেছিলেন স্ত্রী। রাতে তাঁকে বুঝিয়ে বাপের বাড়ি থেকে নিয়ে নিজের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার পথে খুনই করে ফেললেন স্বামী। বুধবার রাতে ঘটনা ঘটেছে চন্দ্রকোনা থানা এলাকার মাংরুল গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন ভোবলা গ্রামে।
বৃহস্পতিবার সকালে ভোবলা গ্রাম থেকে ২কিলোমিটার দুরে ঘাটাল থানার বাইতি চক গ্রামের চাষের জমি থেকে মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ৩৫ বছর বয়সী ৩সন্তানের জননী ওই মৃত মহিলার নাম প্রতিমা মল্লিক বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে বাইতি চক গ্রামের কৃষি জমিতে একটি ডিপ টিউবলের কাছ থেকে দেহটি প্রথমে দেখতে পায় স্থানীয় বাসিন্দারা। পোশাক কিছুটা অবিন্যস্ত থাকায় রটে যায় ধর্ষন করে খুন করা হয়েছে মহিলাকে। ঘটনাস্থলে আসেন ঘাটালের এসডিপিও অগ্নিশ্বর চৌধুরী, ঘাটালের সার্কেল ইন্সপেক্টর দেবাশিস ঘোষ, ঘাটালের ওসি দেবাংশু ভৌমিক। মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি ঘটনাস্থল তন্নতন্ন করে দেখা হয়। পুলিশ একটা বিষয় পরিস্কার হয় যে মহিলা ধর্ষন হলেও মৃতদেহ যেখানে পাওয়া গেছে সেখানে কোনোও ঘটনা ঘটেনি। কারন সেখানে ধস্তাধস্তির কোনোও চিহ্ন ছিলনা। পুলিশের প্রাথমিক ধারনা হয় শুধুই খুন অথবা ধর্ষন করে খুন যাই হোকনা না কেন সেটা অন্য কোথাও করে তারপর এখানে মৃতদেহ ফেলা হয়েছে।
ইতিমধ্যে পুলিশ আটক করে মহিলার স্বামী নেপাল মল্লিককে। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর নেপাল জানায়, সে রাজমিস্ত্রির কাজ করে। গতকালও সে কাজ করে ফেরার পর দেখে তাঁকে দেখার পরও তাঁর স্ত্রী মোবাইলে কথা বলেই যাচ্ছে। নেপাল প্রশ্ন করে মোবাইলের ওপারে কে এমন ব্যক্তি রয়েছে যে সে পরিশ্রান্ত হয়ে ফিরে আসার পরও প্রতিমা কথা বলে যাচ্ছে! এই নিয়ে শুরু হয় কথা কাটাকাটি। নেপাল মারধরও করে। প্রতিমা রাগে গ্রামেরই বাপের বাড়িতে চলে যায়।
রাতে শ্বশুরবাড়ীতে গিয়ে বউকে বুঝিয়ে রাগ ভাঙিয়ে নিয়ে আসে কিন্তু সে অন্য পরিকল্পনা নিয়ে আসে। সোজাপথ না ধরে ঘুরপথে নিয়ে যায় অনেকটা দূর দিয়ে। তারপর রাতের অন্ধকারে নির্জন রাস্তায় স্ত্রীর গলার টুঁটি টিপে হত্যা করে মাঠের মধ্যে ফেলে রেখে ঘরে ফিরে যায়। নেপালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘটনার পেছনে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক বা নিছক সন্দেহ তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।