ওয়েব ডেস্ক : ১৯৯২ সালে ৬ই ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের মামলায় অবশেষে দীর্ঘ ২৮ বছর পর রায়দান হল লখনউয়ের বিশেষ আদালত। এদিন রায়দানে এই মামলার সাথে জড়িত ৩২ জনকেই বেকসুর খালাস করলেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। এদিন বিচারক এই মামলার রায়দানের পরিপ্রেক্ষিতে যুক্তি দিয়ে জানান, বাবরি ধ্বংসের ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত ছিল না। সেই সাথে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট তথ্য প্রমাণও নেই। সেকারণে এদিন আদালতের তরফে অভিযুক্তদের সম্মানের সাথে মুক্তি দেওয়া হয়।
জানা গিয়েছে, এই মামলার রায় প্রায় ২০০০ পাতার। সেকারণে চলতি মাসের ২ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় রায় লেখার কাজ। এদিকে বুধবারই লখনউ আদালত থেকে অবসর হচ্ছেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। বুধবার অবসরের আগে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের রায় দান করেন বিচারক। বুধবার সকাল ১১টা ৫০ মিনিট নাগাদ সেই রায় পড়তে শুরু করেন বিচারক সুরেন্দ্রকুমার যাদব। রায় দান শেষ হয় ১ঃ৪৫ মিনিট নাগাদ। এদিন বিচারক বলেন, বাবরি মসজিদের ঘটনা আসলে পূর্বপরিকল্পিত ছিল না। আদালতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে যে তথ্য প্রমাণ দেওয়া হয়েছিল তা যথেষ্ট নয়।
এদিন বিচারক রায়ের যুক্তি দিয়ে জানান,মসজিদ ধ্বংসের ঘটনায় মসজিদের চূড়ার উপরে কিছু মানুষ উঠেছিলেন, তাদের বাধা দিতে গিয়েই এই ঘটনা ঘটে। তাঁর দাবি, কিছু অসামাজিক ব্যক্তি এই ঘটনায় যুক্ত হওয়ার কথা জানতে পেরে অভিযুক্তরা তাদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তার থেকেই এই ধ্বংসলীলা। তবে এদিন আদালতে নির্দিষ্ট সময় মেনে সাধ্বী ঋতম্ভরা, সাক্ষী মহারাজ সহ মোট ২৫ জন অভিযুক্ত এজলাসে উপস্থিত থাকলেও করোনা পরিস্থিতি ও বার্ধক্যজনিত সমস্যার কারণে আসতে পারেননি লালকৃষ্ণ আডবানী ও মুরলিমনোহর জোশি। একই সাথে এদিন রায়দানে উপস্থিত থাকতে পারেননি উমা ভারতী, মোহান্ত নৃত্যগোপাল দাসও। তবে তারা এজলাসে সশরীরে উপস্থিত না থাকলেও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তারা যোগ দেন।
প্রসঙ্গত, আজ থেকে প্রায় ২৮ বছর আগে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর, বাবরি মসজিদ ভেঙে দেওয়ার ঘটনা গোষ্ঠী হিংসার রূপ নিয়েছিল। নাম জড়িয়েছিল লাল কৃষ্ণ আডবানী, মুরলীধর যোশি সহ তৎকালীন আমলের ৪৯ জন বিজেপি নেতার। গোটা দেশে হিংসার ছবি ফুটে উঠেছিল। এই ঘটনায় প্রায় ১,৮০০ জন নিহত হন। তবে ৪৯ জনের নাম জড়ালেও দীর্ঘ ২৮ বছরে ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার বাকি ৩২ জনের রায় ঘোষণা করে মামলার নিষ্পত্তি করলো লখনউয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত।