ওয়েব ডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের দলিত তরুণীর গণধর্ষণে নির্যাতিতার মৃত্যুতে এবার সরাসরি হস্তক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে নির্যাতিতার দেহ দিল্লির হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সেই দেহ বাড়ি নিয়ে যেতে দেয়নি পুলিশ, বরং জোরজুলুম করে দেহ নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ। নির্যাতিতার পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই নিন্দার ঝড় ওঠে যোগী রাজ্যে। এরপরই নড়েচড়ে বসেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার সকালে উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এদিন এই ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। এদিকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ পাওয়া মাত্রই রীতিমতো নড়েচড়ে বসেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ। এরপরই তিনি এই ঘটনা ফার্স্ট ট্রাক আদালতে বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন৷
এদিকে ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে নির্যাতিতার মৃতদেহ নিয়ে পুলিশি জুলুমে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে চর্চা শুরু হয়েছে। এদিন রাতে যেভাবে নির্যাতিতার পরিবারের সম্মনতি ছাড়াই জোর করে পুলিশের তরফে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হল, স্বাভাবিকভাবেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী। এদিন তিনি টুইটের মাধ্যমে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে লেখেন, “ভারতের এক কন্যাকে গণধর্ষণ করে খুন করা হল। তথ্য ধামাচাপা দেওয়া হল। এবং সব শেষে নির্যাতিতার পরিবারের থেকে শেষকৃত্য সম্পন্ন করার অধিকারও ছিনিয়ে নেওয়া হল। এটা অত্যন্ত অসম্মানজনক এবং অন্যায়ও।”
জানা গিয়েছে, ১৪ দিনের লড়াইয়ের পর মঙ্গলবার দিল্লির সফদরজং হাসপাতালে মৃত্যু হয় নির্যাতিতার। কিন্তু হাসপাতালের তরফে দেহ দিতে অস্বীকার করলে দেহ ফেরত চেয়ে হাসপাতালের সামনে ধরনায় বসেন মৃত তরুণীর পরিবার। পরিবারের দাবি, ধরণা চলাকালীন রাতের দিকে একটি কালো রঙের গাড়িতে পুলিশ এসে তাঁদের দেহ হস্তান্তরের কথা জানিয়ে তুলে নিয়ে যায়। কিন্তু পরে বুঝতে পারে, আসলে মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পুলিশ। তাদের অনুপস্থিতিতেই নির্যাতিতার দেহ তুলে নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলে পুলিশ।
তবে এই ঘটনায় নির্যাতিতার পরিবারের তরফে পুলিশের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগ তো আগেই ছিল। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, পুলিশের পাশাপাশি এবার চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে চিকিত্সার গাফিলতির অভিযোগ আনলেন নির্যাতিতা তরুণীর ভাই। একদিকে উত্তরপ্রদেশের গণধর্ষণের ঘটনার পর একদিকে যখন দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে সেই সময় মঙ্গলবার রাতে পুলিশের নৃশংসতার ঘটনায় নয়া নজির গড়লেন যোগী রাজ্যের পুলিশ। ঘটনায় নির্যাতিতা তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, তাঁরা চেয়েছিলেন তাদের মেয়ের দেহ বাড়িতে এনে তার প্রাপ্য সম্মান দিয়ে শেষকৃত্য সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে দিল্লির সফদরজং হাসপাতালের তরফে দেহ ছেড়ে দেওয়ার পর পরিবারকে না জানিয়ে, মধ্যরাতে রীতিমতো জোর করে দেহ গ্রামে নিয়ে গিয়ে দায়সারা ভাবে তা পুড়িয়ে দেয় পুলিশ। তাদের আরও অভিযোগ, মেয়েকে শেষবারের মতো দেখতে দেওয়া হয়নি। এমনকি জোর করলে তাদের মারধরও করা হয়। ঘটনার পর থেকেই উত্তরপ্রদেশ পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছেন গোটা দেশ।