নিজস্ব সংবাদদাতা : মাথার ওপর কাদের হাত আছে বলা মুশকিল কিন্তু হাজার হাজার লরি বালি চুরি করে যারা নদীর গর্ভ ফাঁকা করে দিচ্ছে তাদের বেয়াদপি কত মারাত্মক হতে পারে তা দেখল শনিবারের মেদিনীপুর শহর। খোদ মেদিনীপুর শহরে এদিন সাত সকালে রীতিমত হেনস্থা হতে হল ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক ও কর্মীদের। ঘটনাস্থল থেকে জেলাশাসকের দপ্তর কয়েকশ মিটারের মধ্যে।
কয়েক মাস আগে খড়গপুর শহরে বালি মাফিয়াদের হাতে রক্তাক্ত হতে হয়েছে বিএলএলআরও সহ এক ঝাঁক আধিকারিক কর্মীদের। কয়েকদিন গড়বেতায় আগে ভূমি রাজস্ব দপ্তরের কর্মীদের ঘিরে রেখে হেনস্থা করে মোরাম ও পাথর খাদানের মাফিয়ার দলবল আর এবারের ঘটনা মেদিনীপুর শহরেই বালি মাফিয়াদের লোকজনের হাতে আক্রান্ত হলেন ।
শনিবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে খোদ মেদিনীপুর শহরের কেরানীটোলায় জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের মূল গেটের কাছেই। শুক্রবার রাতভর জেলার বিভিন্ন অংশে অবৈধ ভাবে বালি পাচারকারিদের বিরুদ্ধে অভিযান চালায় ভূমি ও ভূমিসংস্কার দপ্তরের লোকজন। কাঁসাই নদী বরাবর বিভিন্ন সম্ভাব্য স্থান বেছে নিয়ে এই অভিযান চলে। একাধিক টিম এই অভিযান চালায় যার মধ্যে একটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন জেলা ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক প্রণব মণ্ডল এবং কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ার।
রাতভর তল্লাশি চালানোর পর বেশ কয়েকটি বেআইনী বালি বোঝাই লরি আটক করে সকাল সকাল তাদের নিয়ে ফিরছিলেন ওই আধিকারিক। উদ্দেশ্য বেআইনি বালি বোঝাই গাড়ি গুলিকে জেলার সদর দপ্তর চত্বরে পার্ক করানো। কেরানীটোলার মোড়ে যখন গাড়ি গুলোকে বাঁদিকের রাস্তায় নেওয়ার কথা তখনই কিছু গাড়ি সোজা কিছু গাড়ি ডানদিক ইত্যাদি অব্যবস্থা যান জট তৈরির চেষ্টা করে। আধিকারিক ও সিভিক ভলান্টিয়াররা যখন তাঁদের ঠিকঠাক জায়গায় যেতে বলে তখন বচসা শুরু হয়ে যায়। ওই গাড়ি গুলির পেছনেই মোটর বাইকে করে আসছিল কিছু লোক তারাই চড়াও হয় আধিকারিক ও কর্মীদের ওপর। রীতিমত ঠেলাঠেলি ও হেনস্থার ঘটনা ঘটে। স্থানীয়দের বক্তব্য এই সুযোগ নিয়ে দু-একটি গাড়ি চম্পট দিতে সমর্থ হয়।
খোদ শহরের মধ্যে ঢুকে বালি মাফিয়াদের এই দাপাদাপি রীতিমত অবাক করে দিয়েছে উপস্থিত মানুষজন ও এবং আশেপাশের দোকানদের। তাঁরা জানিয়েছেন, রীতিমত গুন্ডাদের মত আচরন করেছে ওই লোকেরা। পরিকল্পনা করেই ওরা এসেছিল।
জেলা ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক তথা অতিরিক্ত জেলাশাসক তুষার সিংলা বলেছেন, “ঘটনা একটা ঘটেছে। কি ঘটেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনও বেয়াদপি বরদাস্ত করা হবে না।” ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায় কিনা দেখা হচ্ছে।