নিজস্ব সংবাদদাতা: পূর্ব ঘোষণা মতই করোনা মুক্তদের করোনা যুদ্ধে নিয়োগ করতে চলেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন। প্রাথমিক ভাবে ১৮জন করোনা মুক্তকে নিয়োগ করা হতে চলেছে জেলার ৩টি করোনা সম্পৃক্ত হাসপাতালে। এই তিনটি হাসপাতাল হল শালবনী করোনা হাসপাতাল, মেদিনীপুর আয়ুশ এবং ঘাটাল করোনা ওয়ার্ড। প্রতিটি হাসপাতালে ৬ জন করে নিয়োগ করা হবে এবং এঁরা কাজ করবেন রোগি সহায়ক কেন্দ্রের কর্মী হিসেবে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে এই ধরনের হাসপাতাল গুলিতে যেহেতু রোগির পরিজনরা সরাসরি রোগির কাছাকাছি যেতে পারেননা তাই বিভিন্ন জটিলতা বা ভুল বোঝাবুঝি হয়ে থাকে। অন্যদিকে হাসপাতালের মধ্যে থাকা চিকিৎসক, নার্স, চিকিৎসাকর্মীরা প্রচন্ড ব্যস্ততার ফলে রোগির পরিজনদের সঙ্গে সব সময় কথা বলতে পারেননা তাই মধ্যবর্তী হিসাবে কাজ করবেন এই সহায়তা কেন্দ্রের কর্মীরা। এর ফলে এই কর্মীদের মাধ্যমে রোগি এবং তাঁর পরিবার পারস্পরিক যোগাযোগ রাখতে পারবেন।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই মূখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন যে যাঁরা করোনা আক্রান্ত হওয়ার সুস্থ হয়েছেন তাঁদের করোনা যুদ্ধের বিভিন্ন পর্যায়ে নিয়োগ করা হবে এবং সাম্মানিক প্রদান করা হবে। মাসিক ১৫হাজার টাকা ঠিক করা হয়েছে সেই সাম্মানিকের পরিমান। এরপরই জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে করোনা মুক্তরা আবেদন করেন সেই কাজের জন্য। সেখান থেকেই আপাতত ১৮জনকে বেছে নেওয়া হয়েছে এই তিনটি হাসপাতালের রোগি সহায়ক কেন্দ্রের কর্মী হিসেবে।
এই তিনটি হাসপাতালের মধ্যে আয়ুশ এবং ঘাটালে রোগি সহায়ক কেন্দ্র নতুন কারন এই হাসপাতাল বা করোনা ওয়ার্ড দুটি নতুন পরিষেবা দিচ্ছে। অন্যদিকে শালবনী হাসপাতাল সুপার স্পেশালিটি হিসাবে শুরু হওয়ার সময় থেকেই এখানে রোগি পরিষেবা কেন্দ্র চালু ছিল যেখানে ৭ জন কাজ করতেন। ২জন শালবনী গ্রামীন হাসপাতালে ও ৫জন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। এই হাসপাতাল যখন জিন্দালদের দেওয়া হয় তখনও তাঁরা ছিলেন কিন্তু সমস্যা হয় যখন হাসপাতাল ফের রাজ্য সরকারের হাতে চলে আসে এবং করোনা হাসপাতাল হয় তখন রোগি সহায়তা কেন্দ্র আর চালু করা হয়নি। ফলে ওই সাতজন কর্মী এখন বসে রয়েছেন।
ইতিমধ্যেই পশ্চিম মেদিনীপুর জেলাশাসককে লেখা আবেদনপত্রে তারা জানিয়েছেন, কেউ স্ত্রী ও নাবালক পুত্র কন্যাকে সংসার করছেন তো কারও বৃদ্ধ বাবা-মা তাঁর ওপর নির্ভরশীল এই অবস্থায় তাঁদের পুনর্বহাল করা হোক। এক বসে যাওয়া কর্মী জানান, “সরকার যাকে মনে করবেন নিয়োগ করুন, আমাদের কোনও আপত্তি নেই। শুধু আমাদের কাজের জায়গায় ফিরিয়ে নিন। করোনা পরিস্থিতে ভয়ঙ্কর সঙ্কট ও মানসিক যন্ত্রনায় রয়েছি আমরা। মাসের শেষে ৭হাজার টাকা পেতাম। আমরা ওই নিয়েই চালিয়ে নেব কিন্তু আমাদের যেন কাজ না চলে যায়, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এই টুকু আবেদন আমাদের।”