নিজস্ব সংবাদদাতা: অবিভক্ত পশ্চিম মেদিনীপুরের রক্তাক্ত মাওবাদী যুগের স্মৃতি উসকে দিয়ে উদ্ধার হল অন্ততঃ ৯টি দেশি বন্দুকের কঙ্কাল সঙ্গে আরও বেশ কিছু ক্ষয়িষ্ণু ধারালো অস্ত্র। পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট সূত্রে খবর পাওয়ার পর গোয়ালতোড় থানা এলাকার উখলার জঙ্গল থেকে উদ্ধার হয়েছে ভঙ্গুর এই আগ্নেয়াস্ত্র গুলি যেগুলো এখন পুরোপুরি ব্যবহারের অযোগ্য বলেই মনে হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০০৮ সালে লালগড় আন্দোলনের সময় জনসাধারণের কমিটিকে সামনে রেখে জঙ্গলমহলের দখল নিয়েছিল মাওবাদীরা। সেই সময় লালগড়ের পাশাপাশি গোয়ালতোড় এলাকাও মাওবাদীদের দখলে চলে যায়। মাওবাদীদের সশস্ত্র স্কোয়াডের নেতা সিধুর নেতৃত্বে গোয়ালতোড়ে রক্তাক্ত অধ্যায়ের সূচনা হয়। বহু সিপিএম নেতা কর্মী ও সাধারন মানুষকে খুন করে মাওবাদীরা। ২০০৯য়ে যৌথ বাহিনী এরিয়া ডোমিনেশনের মাধ্যমে গোয়ালতোড়ে প্রবেশ করে অন্যদিকে সিপিএমও মাওবাদী প্রতিরোধের নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গড়ে তোলে। ২০১০ সালে যৌথ বাহিনীর এনকাউন্টারে সিধু সহ তার বাহিনীর ৭ জনের মৃত্যু হলে গোয়াল তোড় থেকে পিছু হটে মাওবাদীরা। ২০১১ সালে বিধানসভা নির্বাচনে তৃনমূল সরকার গঠিত হলে এই এলাকা থেকে সিপিএমের আধিপত্যও হ্রাস পায়।
এই অস্ত্র কাদের ছিল তা আজ হলফ করে বলা মুশকিল কারন সরাসরি উখলাতে মাওবাদীরা খুব বেশি সক্রিয় ছিলনা যদিও রাতে জঙ্গলে অবস্থান করতেই পারে। অন্যদিকে সিপিএমের বাহিনীর ক্যাম্প এখানে ছিলনা। সেই সময় মাওবাদীদের লক্ষ্য ছিল হুমগড় দখল করা অন্যদিকে সেটা বুঝতে পেরেই সিপিএমের বাহিনী হুমগড়ে ক্যাম্প করেছিল। উখলা হুমগড় থেকে প্রায় ৬ কিলোমিটার। অনেকের ধারনা নষ্ট হয়ে যাওয়া দেশি দোনলা বন্দুক গুলি সিপিএমের সশস্ত্র বাহিনীরই। তৃনমূল ক্ষমতায় আসার পর তাঁরাই বন্দুক গুলি মাটির নিচে পুঁতে দেয়।
অন্য আরেকটি মতে এলাকা থেকে পালানোর সময় মাওবাদীরাই বন্দুক পুঁতে দিয়ে পালায় লক্ষ্য ছিল পুনরায় এলাকায় ফিরতে পারলে বন্দুক গুলি কাজে লাগাবে। জীর্ন বন্দুকগুলির পাশ থেকে পাওয়া গেছে একটি মরচে পড়া দুধের ক্যান। মিলেছে কিছু বিদ্যুৎ বাহি মরচে পড়া তার। সাধারন ভাবে এই ধরনের দুধের ক্যান মাওবাদীরা দেশি মাইন বা আইইডি বানানোর কাজে ব্যবহার করত। পুলিশ গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বলে জানা গেছে। ভঙ্গুর অস্ত্র গুলি বর্তমানে গোয়ালতোড় থানায় আনা হয়েছে।