ওয়েব ডেস্ক : করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন দেশ তথা রাজ্যের একাধিক গুণী ব্যক্তিত্ব৷ মারণ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে চলে গেলেন পরমাণু শক্তির মাধ্যমে দেশকে স্বনির্ভর করার অন্যতম কারিগর বিজ্ঞানী শেখর বসু। গোটা দেশকে স্বনির্ভর করে সকলের অচিরে নিজেই চলে গেলেন এই বিজ্ঞানী৷ জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন যাবৎ করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন এই প্রাবাদপ্রতিম বিজ্ঞানী৷ বৃহস্পতিবার সকালে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।
জানা গিয়েছে, দিন কয়েক আগেই করোনা আক্রান্ত হন বিজ্ঞানী শেখর বসু। শ্বাসকষ্টের সমস্যা হলে দ্রুত তাঁকে কলকাতার একটি নামি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর চিকিৎসায় গঠন করা হয় চিকিৎসকদের মেডিক্যাল বোর্ড। কিন্তু তাতেও লাভ হয়না৷ ক্রমশই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা ক্রমশ কমে আসছিল। চিকিৎসকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও তাঁকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি৷ এরপর বৃহস্পতিবার ভোর ৫টায় সমস্ত লড়াইয়ের অবসান ঘটিয়ে পরলোক গমন করেন বিজ্ঞানী শেখর বসু। জানা গিয়েছে, মৃত্যুকালে বিজ্ঞানী শেখর বসুর বয়স হয়েছিল মাত্র ৬৭ বছর। তিনিই প্রথম ব্যক্তি যিনি ভারতের প্রথম পরমাণুজ্বালানি চালিত ডুবোজাহাজ আইএনএস অরিহন্তের পরমাণুচুল্লির নকসা তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীকালে তিনিই ভারতের পরমাণু শক্তি কমিশনের সভাপতি পদে ভূষিত হয়েছিলেন। এরপর একের পর এক জীবনে নানা পদ অলংকৃত করেন এই বাঙলী বিজ্ঞানী। পান পদ্মশ্রী সম্মান।
বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট স্কুল থেকে পঠনপাঠন শেষ করার পর বম্বেতে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে গিয়েছিলেন তিনি। ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ হওয়ার পর শেষমেশ যোগদান করেন ভাবা অ্যাটোমিক রিসার্চ সেন্টারে। সেখানে যোগ দেওয়ার পর পরই কিছুদিনের মধ্যেই ডিরেক্টরের পদ পান। দীর্ঘদিন সেই পদে আসীন থাকেন বিজ্ঞানী শেখর বসু। এরপর তিনি যোগ দেন পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান পদে। এখানেই থেমে থাকেননি এই বাঙালি বিজ্ঞানী। দীর্ঘদিন তিনি পরমাণু শক্তি মন্ত্রকের সচিবের দায়িত্বও তাকে সামলাতে হয়েছে৷ এরপর ২০১৪ সালে এল সেই দিন। ভারত সরকারের তরফে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়। শেখরবাবু বরাবরই দেশকে পরমাণু শক্তিতে স্বনির্ভর করতে চেয়েছিলেন। দেশের ইতিহাসে শেখর বসুর গবেষণা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে বলে জানিয়েছেন অন্যান্য বিজ্ঞানীরা। এই বাঙ্গালী বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই বৃহস্পতিবার শোকপ্রকাশ করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সাথে শোকস্তব্ধ অন্যান্য বিজ্ঞানীরা।