নিজস্ব সংবাদদাতা: মাস খানেক আগে তৃণমূলের হাতে বেধড়ক মার খেয়েছিলেন খড়গপুর শহরের বিজেপি নেতা শৈলেন্দ্র সিং। খড়গপুর বিদ্যসাগর শিল্প তালুকে নিজের দলের শ্রমিকদের ঠিকাদারি কাজ পাইয়ে দেওয়ার দাবি নিয়ে গেছিলেন তিনি। বুধবার সেই শ্রমিক নেতাই চলে গেলেন তৃণমূলে সঙ্গে খড়গপুর শহরের আরও তিন নেতা রাজদীপ গুহ, অজয় চট্টোপাধ্যায়, সজল রায়।
এঁদের মধ্যে শৈলেন্দ্র ভারতীয় জনতা মজদুর ট্রেড ইউনিয়ন কাউন্সিল (BJMPTC) জেলা সভাপতি পদ থেকে অবসর নিয়েছিলেন কয়েকদিন আগেই। রাজদীপ দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সাধারণ সম্পাদক, অন্যদিকে অজয় ও সজল এক সময়ে দলের উত্তর মন্ডলের সহ সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকের দায়িত্ব সামলেছেন।
বর্তমানে সংসদের অধিবেশনে যোগ দিতে দিল্লিতে রয়েছেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। আর সেই মুহূর্তে তাঁরই লোকসভা কেন্দ্র এলাকায় বড়সড় ভাঙন ধরালেন খড়গপুর তৃণমূলের নেতা তথা বিধায়ক প্রদীপ সরকার। দলের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ নিয়ে এমনিতেই দলের কাজকম্ম ছেড়ে বসে রয়েছেন একঝাঁক বিজেপি নেতা কর্মী। কৌশলে সেই সুযোগ নিলেন প্রদীপ সরকার। চার নেতাকে নিয়ে বুধবার কলকাতায় তৃণমূলের দলীয় দপ্তরে ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া করালেন প্রদীপ। রাজ্যের প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের হাত থেকে তৃণমূলের পতাকা তুলে নিয়েছেন ওই চার নেতা।
কেন বিজেপি ছাড়লেন তার জবাব দিতে গিয়ে রাজদীপ গুহ জানিয়েছেন, ” দিনের পর দিন কর্মীরা মার খেয়েছেন, জেল খেটেছেন কিন্তু দল পাশে দাঁড়ায়নি। দলে পুরানো অভিজ্ঞ নেতাদের কোনও সম্মান নেই । দলের কর্মসূচিতে অবধি ডাকা হয়না। দলের যে অংশ চুরি দুর্নীতি কাটমানিতে জড়িত তাদেরই মর্যাদা বেশি এমন কি দিলীপ ঘোষও তাঁদের বেশি পাত্তা দেন। এই অবস্থায় এই দলে থেকে মানুষের কাজ করা অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।”
২০২১-এর নির্বাচনের আগে গেরুয়া শিবিরের কাছে কতটা ধাক্কা জানতে চাওয়া হলে বিজেপির এক খড়গপুর নেতা জানান, দল এবং সংগঠনের কোনও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাতেই ছিলেননা ওই চার নেতা তাই দলে এর কোনও প্রভাবই পড়বেনা। দলের রাজ্য সাধারন সম্পাদক তথা খড়গপুর শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা তুষার মুখার্জী বলেন, ” দলের একজন ভোটারও যদি অন্যদলে যায় সেটাকেও আমরা ক্ষতি মনে করি কিন্তু যদি সংগঠনের দিক থেকে বলি তাহলে বলতে হয়, এঁরা কেউই নিচের তলার সংগঠক নন তাই এঁদের যাওয়াতে সংগঠনের কোনোও ক্ষতি হবেনা। আর এই সময়ে যাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃনমূলে যান তাঁদের ভাবনাতেই যে বিরাট গলদ রয়েছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা।”
এদিকে দলত্যাগীদের বক্তব্য আগামী ২৬শে সেপ্টেম্বর আরও বড়সড় ভাঙন দেখতে পাবে বিজেপি ওই দিন ১০০০বিজেপি সমর্থক তৃনমূলে যোগ দিতে চলেছে। রামমন্দিরের কাছে বড় মন্ডপ তৈরি করে সেই আয়োজন করতে চলেছে তৃনমূল। এদিন প্রদীপ সরকারের এই অভিযানে সঙ্গি ছিলেন দুই তৃনমূল নেত্রী পূজা নাইডু ও হেমা চৌবে।