ওয়েব ডেস্ক : করোনা আবহে দীর্ঘ কয়েকমাসে একাধিক অভিযোগ উঠেছে কলকাতা মেডিক্যালের বিরুদ্ধে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কোনও হেলদোলই নেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। এবার এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠলো কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের বিরুদ্ধে। ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরেই সিওপিডিতে আক্রান্ত গড়িয়ার বাসিন্দা সুরথ নাথ মৈত্র (৮৬)। সেকারণে মাঝে মধ্যেই তিনি প্রবল শ্বাসকষ্টে ভোগেন। কিছুদিন আগে আচমকা তার শ্বাসকষ্ট শুরু হলে পরিবারের সদস্যরা তাকে স্থানীয় একটি হাসপাতালে ভর্তি করেছিলেন। দিনকয়েক সেখানে চিকিৎসার পর সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফেরেন সুরথবাবু। কিন্তু শনিবার সকালে ফের তিনি অসুস্থ হিয়ে পরেন। তীব্র শ্বাসকষ্টের সমস্যা শুরু হয়।
তাঁর শারীরিক অবস্থা ক্রমশ অবনতি হতে শুরু করে। এরপর পরিবারের সদস্যরা ওই বৃদ্ধকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে নিয়ে যান৷ যেহেতু ওই বৃদ্ধ শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন সেকারণে ফিভার ক্লিনিকে তাঁকে পরীক্ষা করে কলকাতা মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করেন। সে অনুযায়ী তাকে কলকাতা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে গ্রিন বিল্ডিংয়ে ভর্তির সুপারিশ করেন। কিন্তু গ্রিন বিল্ডিংয়ে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করা হলেও তখনও পর্যন্ত ওই বৃদ্ধ আদেও করোনা আক্রান্ত কিনা তার টেস্ট না হতেই তাকে করোনা ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়। এদিকে তীব্র শ্বাসকষ্টে রীতিমতো ছটফট করছেন ওই বৃদ্ধ, সেসময় স্ট্রেচারে করে নিয়ে যাওয়ার সময় হাসপাতাল কর্মীরা রোগী বলেন, তাঁর নিজের জামাকাপড় নিজেকেই কাঁচতে হবে। নইলে এক জামা পড়েই থাকতে হবে। তাঁরা কাচতে পারবে না। তবে একথা শুধুমাত্র রোগীকে বলেই থেমে থাকেননি তারা। হাসপাতালে দুই চুক্তিভিত্তিক কর্মী রীতিমতো তার পরিবারের সদস্যদের হুমকির সুরে বলেন, ”রোগী নিজের জামা কাপড় নিজে কাচতে পারবেন তো? আমরা কিন্তু জামাকাপড় কাচতে পারব না। না পারলে ফেরার দিনও এই জামাই পরা থাকবে।”
ওই পরিস্থিতির মধ্যে হাসপাতাল কর্মীদের এই কথা শুনে রীতিমতো তাজ্জব ছেলে সঞ্জয় মৈত্র এবং মেয়ে মৌসুমী মৈত্র। যে মানুষটা শ্বাস নিতেই পারছেন না। তিনি কিভাবে নিজের জামাকাপড় কাঁচতে পারবেন? এই ঘটনায় বৃদ্ধের ছেলে সঞ্জয় মৈত্রের অভিযোগ, “৮৬ বছরের এক শয্যাশায়ী বৃদ্ধের যা শারীরিক অবস্থা, তা দেখে যে-কোনও স্বাভাবিক মানুষের মায়া হয়,সেখানে এদের কি শরীরে দয়া মায়া বলে কিছু নেই ? কীভাবে এই মানুষটাকে নিজের জামা কাপড় নিজে কাচার কথা বলতে পারেন এরা! আমরা এই বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানাব।”এই ঘটনাটি রোগী পরিবারের তরফে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানানো হলে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ঘটনায় হাসপাতালের এক আধিকারিক বলেন, “আমরা চেষ্টা করছি যাতে এই ধরনের অভিযোগ না ওঠে। কেন এই অভিযোগ, কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তা অবশ্যই আমরা খোঁজ নেব।”