Homeএখন খবরখড়গপুরের প্রবীণ সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায় চৌধুরীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল

খড়গপুরের প্রবীণ সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায় চৌধুরীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল

নিজস্ব সংবাদদাতা: প্রবীণ সাহিত্যিক নন্দদুলাল রায় চৌধুরীর অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল বলে জানানো হয়েছে তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে। বুধবার দুপুরে তিনি ভাত খেয়েছেন বলে জানা গেছে। যদিও এখনও তাঁর অক্সিজেন চলছে এবং শরীর খুবই দুর্বল বলেই জানা গেছে। প্রায় পঁচাশি বছর বয়সী প্রবীণ কথা সাহিত্যিক, প্রাবন্ধিক এবং পত্র লেখক করোনা মুক্ত হয়ে শালবনী কোভিড হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরছিলেন রবিবার। দুদিন কিছুটা ভাল থাকার পর ফের অবস্থার অবনতি হওয়ায় বাড়ির লোকেরা মঙ্গলবার রেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। আপাততঃ রেলের হাসপাতালের আইটিইউ(ইটেনসিভ ট্রমা ইউনিটে) ভর্তি রয়েছেন তিনি।

রেলের হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে বয়স জনিত নানা সমস্যার পাশাপাশি করোনার প্রকোপে কাহিল পড়েছেন তিনি। তাঁর ফুসফুসে করোনার যথেষ্ট ধকল রয়েছে। সেই অবস্থা থেকে বের করে আনার আপ্রান চেষ্টা করছেন চিকিৎসকরা
তবে এখনও যথেষ্ট ট্রমার মধ্যে রয়েছেন তিনি। খড়গপুর বইমেলার সংগঠক তথা তৃনমূল কংগ্রেসের জেলা মুখপাত্র দেবাশিস চৌধুরী জানিয়েছেন, ”শালবনী থেকে নেগেটিভ হয়ে ফিরেছেন উনি। তারপরই ওনার সাথে দেখা করেছি। রেল হাসপাতালেও দেখা করতে গেছিলাম। শারীরিক অবস্থা বয়সজনিত ও করোনা কারনে যথেষ্ট দুর্বল। শালবনীতে কী হয়েছে বলতে পারবনা তবে একটা ট্রমার মধ্যে রয়েছেন বলেই মনে হয়েছে। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠুন এই কামনা করছি।”

মঙ্গলবার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি প্রকাশের পরেই তোলপাড় হয়ে ওঠে শহর। দেখা যায় প্রবীণ অশীতিপর মানুষটি মেঝেতে পড়ে রয়েছেন। নিম্নাংশে পোশাক প্রায় নেই। চমকে ওঠে গোটা শহর। কয়েকদিন আগেই একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছিল জেলায়। যে ভিডিওতে দাবি করা হয় সেটি শালবনী হাসপাতালের। পুলিশের সাইবার সেল ইতিমধ্যে সেই ভিডিও নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্যদপ্তর অবশ্য সেটি শালবনী কোভিড হাসপাতালের নয় বলেই জানিয়েছে। তারপরই পুলিশ তদন্ত শুরু করে। তার পর পরই প্রবীণ সাহিত্যিকের অর্ধ উলঙ্গ হয়ে মেঝেতে পড়ে থাকা ছবি শহরে উদ্বেগের সৃষ্টি করে। শিল্পী সাহিত্যিক মহলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

শহরের দুই প্রতিষ্ঠিত বাচিক শিল্পী কৃশানু আচার্য ও জাহির চৌধুরী অত্যন্ত বেদনাভরা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। কৃশানু জানান, ” ছবিটি নন্দদুলাল বাবুর হলেও কোথায় তোলা জানিনা কিন্তু এ ছবি দেখার পর বুক ফেটে যাচ্ছে। খড়গপুর শহরের বটবৃক্ষ সম অভিভাবক মানুষটিকে এ কী উপহার দিচ্ছি আমরা? এ যেন আমরা আমাদের ভবিষ্যৎকেই প্রত্যক্ষ করলাম।”
অন্যদিকে জাহির চৌধুরী জানিয়েছেন, “সারা রাত ঘুমোতে পারিনি ওই ছবি দেখার পর। আকাশবাণীতে যাঁর চিঠির মধ্যে দিয়ে সারা বিশ্ব খড়গপুর শহরকে নতুন ভাবে জেনেছে। জেনেছে কলকারখানা, রেল জংশনের পাশাপাশি এ শহর শিল্প সাহিত্যের। সেই মানুষটির এমন পরিণতি!”

খড়গপুর শহরের প্রিয় সন্তান নন্দদুলাল রায়চৌধুরীর সেই মর্মান্তিক ছবি ‘দ্য খড়গপুর পোষ্ট’য়ের কাছেও পৌঁছায় কিন্তু তার সত্যতা যাচাই করতে পারা যায়নি তাই ছবিটি আমরা প্রকাশ করতে পারলামনা। উদ্বিগ্ন শহরবাসীকে শুধু এটুকুই জানানো যে আপাতত সঙ্কটমুক্ত তিনি। বুধবার সকালে পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল যে খুবই সঙ্কটজনক অবস্থা তাঁর। দুপুরে অবশ্য জানানো হয় একটু ভাল আছেন তিনি। মাঝে মধ্যে তাঁর চোখের কোন বেয়ে জল গড়িয়ে পড়ছে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয় ওনার পরিচয় জানার পর বিশেষ আতিথেয়তার মর্যাদায় তাঁকে পরিষেবা দিচ্ছে রেল। খড়গপুরবাসীর কাছে এটাই বড় পাওনা এখন।
 ছবি: কবি জয়শ্রী সরকার ও জাহির চৌধুরীর সাথে নন্দদুলাল রায় চৌধুরী। সৌজন্যে জাহির চৌধুরী।

RELATED ARTICLES

Most Popular