Homeএখন খবরচূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি একাধিক কলেজের

চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে আপত্তি একাধিক কলেজের

ওয়েব ডেস্ক : করোনা আবহে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলির ফাইনাল সেমিস্টার নেওয়া হবে কিনা তা নিয়ে নানা আলোচনার পর অবশেষে সুপ্রিমকোর্টের নির্দেশ মেনে কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অক্টোবরেই চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বলা হয়েছে, করোনা আবহে যেহেতু এই মূহুর্তে পরীক্ষার্থীদের কলেজে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না, সেকারণে বাড়িতে বসে বই দেখে খাতায় উত্তর লিখে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে স্ক্যান করে উত্তরপত্র পাঠানোর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু রাজ্য শিক্ষা দফতরের তরফে এই নির্দেশিকা জারির পরও স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কলেজে এইবিষয়ে একাধিক জট রয়েছে৷ সে অনুযায়ী চূড়ান্ত বর্ষের পরীক্ষা নিয়ে বুধবার কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সোনালি চক্রবর্তী বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে কলেজগুলির সাথে ভার্চুয়াল বৈঠক করা হয়েছিল। এদিনের বৈঠকে পরীক্ষা পদ্ধতি নিয়ে একধিক আলোচনার পরেও বেশ কিছু বিষয়ে প্রশ্ন ও জট রয়ে গিয়েছে বলেই মনে করছেন বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষেরা। মূলতঃ এদিনের বৈঠকে কলেজগুলিতে কিভাবে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে এবমগ সেই সাথে পরীক্ষায় পড়ুয়াদের হাজিরার হিসেব রাখার মতো নানা বিষয়ে আলোচনা হয়।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, পরীক্ষার্থীদের ইমেল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। পরীক্ষার্থীদেরও ওই একই পদ্ধতিতে উত্তরপত্র স্ক্যান করে ই-মেল কিংবা হোয়াটসঅ্যাপে পাঠাতে হবে বলেই বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তে আপত্তি তোলেন একাধিক কলেজের অধ্যক্ষ। এবিষয়ে বঙ্কিম সরদার কলেজের অধ্যক্ষ জানান, হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে কোনোভাবেই যাতে প্রশ্ন কিংবা উত্তরপত্র আদানপ্রদান করা না হয়। এতে সমস্যায় পড়তে পারেন কলেজ কর্তৃপক্ষ কিংবা পরীক্ষার্থীরা।

এবিষয়ে বুধবার সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়ের টিচার ইনচার্জ প্রবীর দাস জানিয়েছেন, আমফানের জেরে সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকা তছনছ হয়ে গিয়েছে। গোটা এলাকায় ইন্টারনেট পরিষেবা একেবারেই ক্ষীণ গতিতে চলছে। তা ছাড়া ওইসব এলাকাগুলিতে অনেক পরীক্ষার্থীরই স্মার্টফোন নেই। বাড়ি থেকে সাইবার ক্যাফেও অনেক দূরে। বিশেষত মৌসুনি দ্বীপ, জি প্লট, রাক্ষসখালির মতো প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে বহু ছাত্রছাত্রী সুন্দরবন মহাবিদ্যালয়ে পড়তে আসেন। তারা অত্যন্ত দরিদ্র পরিবার থেকে উঠে আসা ছাত্রছাত্রী। সেকারণে স্মার্টফোন ব্যবহার করা তাদের পক্ষে অসম্ভব। এদিকে উত্তরপত্র জমা দিতে সরাসরি কলেজে যেতে হলেও নদী পেরিয়ে আসতে হবে। ফলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উত্তরপত্র জমা দেওয়া একপ্রকার অসম্ভব। তবে এদিনের বৈঠকে কলেজগুলির তরফে একাধিক বিষয়ে আপত্তি জানানো হলে, কর্তৃপক্ষের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, উত্তরপত্র কী ভাবে জমা নেওয়া হবে, সেটা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট কলেজ।

এদিনের বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, পরীক্ষা শুরুর অন্তত ঘন্টা খানেক আগে ইমেলের মাধ্যমে কলেজগুলিকে প্রশ্নপত্র পাঠানো হবে। পরীক্ষা শুরুর কয়েক মিনিট আগে কলেক কর্তৃপক্ষ সেটি নিজেদের ওয়েব সাইটে আপ্লোড করবে। পরীক্ষার্থীরা সেখান থেকে ডাউনলোড করেই পরীক্ষা দিয়ে পারবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সিদ্ধান্তে স্বাভাবিকভাবেই আপত্তি জানিয়েছে একাধিক কলেজ কর্তৃপক্ষ৷ তারা জানান, এ ক্ষেত্রে যদি সব কলেজ এক সময়ে প্রশ্ন আপলোড না করে তাতে সমস্যা আরয়াও বাড়বে৷ এবিষয়ে কলেজগুলির দাবি, যদি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রশ্ন আপলোড করেন, সেক্ষেত্রে সব কলেজের পরীক্ষার্থীরাই সেখান থেকে প্রশ্নপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন।

একই সাথে এদিন কলেজের অধ্যক্ষরা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে বিএ এবং বিএসসি-র পরীক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এমসিকিউ করার আবেদন করেন। অধ্যক্ষদের সেই প্রস্তাবও খারিজ করেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেন, যেহেতু বিএ এবং বিএসসি-র প্রশ্নপত্র আগে থেকেই তৈরি রয়েছে, সেক্ষেত্রে নতুন করে প্রশ্ন তৈরি করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়, লকডাউনের আগে পর্যন্ত যতটা পড়ানো হয়েছিল তার ওপর ভিত্তি করেই প্রশ্ন দেওয়া হবে। এদিকে এদিনই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে জানানো হয়, বৃহস্পতিবারই বি-কম প্রথম সিমেস্টারের ফলপ্রকাশিত হবে।

RELATED ARTICLES

Most Popular