Homeএখন খবরসস্ত্রীক করোনাক্রান্ত খড়গপুর পৌরসভার ই.ও! সঙ্কটে পুর প্রশাসন, পুজোর আগে অনিশ্চিত সকলের...

সস্ত্রীক করোনাক্রান্ত খড়গপুর পৌরসভার ই.ও! সঙ্কটে পুর প্রশাসন, পুজোর আগে অনিশ্চিত সকলের জন্য বাড়ি, জঞ্জাল মুক্ত পুরসভা

নিজস্ব সংবাদদাতা: একে মা মনসা তায় ধুনোর গন্ধ। সময়মত নির্বাচন না হওয়ায় বোর্ড হীন রাজ্যের অন্য পুরসভা গুলির মত খড়গপুর পৌরসভাও। প্রশাসক বোর্ড একটি আছে বটে কিন্তু তার ক্ষমতা খুবই সীমাবদ্ধ। এমতাবস্থায় পৌরসভার ১৬আনা দায়িত্বের অধিকারী পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার বা ই.ও। পরিকল্পনা আর তার রূপায়ন যাবতীয় ক্ষমতার দায়িত্বে তিনিই। সেই ই.ও অরুন কুমার সামন্ত করোনা আক্রান্ত হওয়ায় চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়ে গেল খড়গপুর পৌরসভা। পুরসভার যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি অনেকটাই পিছিয়ে গেল বলে জানিয়েছেন পুরসভার বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্বে থাকা বিভাগীয় প্রধানরা।বিশেষ করে ধাক্কা খেল সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্প যা কিনা পুজোর আগেই হয়ে যাওয়ার কথা ছিল। ধাক্কা খেয়েছে পুজোর আগে শহরকে জঞ্জাল মুক্ত করার উদ্যোগও।

জানা গেছে গত ৫ সেপ্টেম্বর খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে র‍্যাপিড আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন। তার আগের কয়েক দিন শারীরিক অস্বস্তি বোধ করায় অফিস আসছিলেননা তিনি। শরীরের তাপমাত্রা বেশি ছিল এবং কাশি হচ্ছিল। সন্দেহ জনক মনে হওয়াতেই তিনি র‍্যাপিড আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করাতে যান এবং তার পরেই পজিটিভ ধরা পড়ে। কোনোও ঝুঁকি না নিয়েই ওই দিন রাতেই শালবনী করোনা হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পদমর্যাদা সম্পন্ন ওই আধিকারিককে। পরের দিন অর্থাৎ রবিবার ফের খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে র‍্যাপিড আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হয় সামন্তের স্ত্রীর। তিনিও পজিটিভ হয়েছেন বলে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

একটি সূত্রে জানা গেছে আক্রান্ত হওয়ার কয়েকদিন আগে চার দিন ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর পুলিশ লাইনে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে ব্যস্ত ছিলেন এই আধিকারিক। একজন দক্ষ আধিকারিক হিসাবেই এই কাজ করার জন্য সরকার তাঁকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আর সেই কাজ করার পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। মনে করা হচ্ছে সেখান থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন তিনি। এদিকে নির্বাচিত পৌর বোর্ড না থাকায় পুর প্রশাসনের সঙ্গে রাজ্য সরকারের যাবতীয় যোগসূত্র ছিলেন অরুনবাবু ফলে চূড়ান্ত সঙ্কটে পড়েছে খড়গপুর পুরসভা। প্রশাসনিক সমস্ত কাজই স্তব্ধ হয়ে গেছে। খড়গপুর পুরসভার দুই প্রাক্তন চেয়ারম্যান রবিশঙ্কর পান্ডে এবং জহর লাল পাল জানিয়েছেন, নির্বাচিত পৌরবোর্ড থাকা কালীনই একজন ই.ও কে ব্যাপক দায়িত্ব পালন করতে হয়, বর্তমান বোর্ড না থাকায় সেই দায়িত্ব দশ গুন বেড়ে গিয়েছে। তিনি অসুস্থ হওয়ায় সমস্যা বাড়ল। বহু পরিকল্পনা পিছিয়ে গেল।

জহর লাল পাল জানিয়েছেন, ” পৌরসভার অন্তর্গত গরিব মানুষদের জন্য হাইজ ফর অল বা সকলের জন্য বাড়ি এই প্রকল্পে ২০১৮-১৯ অর্থ বর্ষে পুরসভার অধীন ৮০০ বাড়ির কাজ চলছিল এর প্রায় ৭৫ শতাংশ বাড়ির কিছুটা হস্তান্তর হয়েছে। বেশির ভাগ বাড়ির ৭০ থেকে ৮০% কাজ হয়ে গেছে আর ২৫% বাড়ির কাজ শুরু করা যায়নি লকডাউনের জন্য। এই পুরো কাজটাই পুজোর আগে করার লক্ষ্যে হাঁটছিল পুরসভা। এই বাবদ রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আমাদের ১০ থেকে ১২ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। এই পুরো বিষয়টি তদবির করছিলেন ই.ও সাহেব। সেই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত ধাক্কা খেল। ওই টাকা না আসলে পুজোর আগে উপভোক্তাদের হাতে বাড়ি তুলে দেওয়া যাবেনা।”

বিদায়ী বোর্ডের আরেক সদস্য রবিশঙ্কর পান্ডে জানান, “পুজোর আগে আমাদের আরও একটি লক্ষ্য ছিল পুরসভাকে আবর্জনা মুক্ত করা। হিরাডিহিতে অবস্থিত পৌরসভার ডাম্পিং ইয়ার্ড নিয়ে যে সমস্যা চলছে যার ফলে শহরকে সঠিক সময়ে আবর্জনা মুক্ত করা যাচ্ছেনা। এই সমস্যা সমাধানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছিলেন তিনি। সেই কাজটাও পিছিয়ে গেল। এখন আমাদের একটাই কামনা দ্রুত ভাল হয়ে ফিরুন উনি তাড়াতাড়ি কাজে ফিরুন।”

RELATED ARTICLES

Most Popular