নিজস্ব সংবাদদাতা; ঝাড়গ্রাম: টানা আটঘন্টার লড়াই লড়লেন ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসকিউ ফোর্স বা NDRF য়ের জওয়ানরা। প্রবল জলস্রোত আর জোরালো ঘূর্ণির মধ্যেই রাতভর অন্ধকারের মধ্যেই চলল ঘন্টার পর ঘন্টা তল্লাশি তারপর দিনের আলো ফোটার সাথে সাথেই উদ্ধার হল বাইক সমেত সুবর্নরেখা নদীতে তলিয়ে যাওয়া দশম শ্রেনীর ছাত্রের নিথর দেহ।
ঝাড়গ্রাম জেলার সাঁকরইল থানার অন্তর্গত রগড়া এলাকার স্কুলপড়ুয়া ১৬ বছরের শম্ভু মাইতি আরও দুই বন্ধুর সাথে এসেছিলেন সুবর্ণরেখা নদীর বাঁশিখালে বন্যার ভয়াবহ সৌন্দর্য প্রত্যক্ষ করার জন্য। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার মুখে বাড়ির ফেরার মুখেই সেই বাঁশিখাল সেতুর ওপর থেকে নিয়ন্ত্রন হারিয়ে বাইক সমেত পড়ে যান তিনজনই।
ঘটনাটি দেখতে পেয়েই স্থানীয়রা ছুটে আসেন। ২জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও মেলেনি শম্ভু কে। দুরন্ত স্রোতে ভেসে যায় সে। এরপরই ব্লক প্রশাসনের তলব পেয়ে উদ্ধার কার্য শুরু করে জাতীয় বিপর্যয় উদ্ধারকারি দল NDRF.
NDRF য়ের এই উদ্ধারকার্য বিস্মিত করেছে এলাকার সাধারন মানুষকে। রাতভর ভরা নদীর পাড়ে থেকে সবিস্ময়ে উদ্ধার কার্য দেখেছেন কয়েকশ মানুষ আর উৎসাহ দিয়েছেন জওয়ানদের।
খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে র্যাফট বা বাতাস ভরা মোটা পলিথিনের নৌকা নামায় NDRF। ফ্লুরুসেন লাইফ জ্যাকেট আর জোরালো সার্চ লাইট নিয়ে প্রবল ঘূর্ণি আর স্রোতের বিরুদ্ধে শম্ভুর খোঁজে তল্লাশি চালায় তাঁরা এবং অবশেষে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় দেহ। উল্লেখ্য টানা দুদিনের বৃষ্টির পর ঝাড়খণ্ডের গালুডি জলাধার ছাড়ায় সুবর্নরেখা ক্রমশ টইটম্বুর হয়ে উঠেছিল। নদীর সেই ভয়াবহ সুন্দর দৃশ্য দেখার জন্য আশেপা
শের লোকেদের মত দূরদূরান্ত থেকেও মানুষ ভিড় করেছিল সুবর্ণরেখার বাঁশিখাল সেতু সংলগ্ন এলাকায়। এই সময়েই দুর্ঘটনায় বাইক সমেতই তলিয়ে যান তিন বন্ধু। ঘটনাটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক হলেও শেষ অবধি দেহ পাওয়াটা জরুরি ছিল।
NDRF যে তৎপরতার সঙ্গে দেহ উদ্ধার করেছে তাতে খুশি মানুষ। এদিকে শুক্রবার সকাল থেকেই জলস্তর নামছে সুবর্নরেখার। প্লাবনের যে আশঙ্কা দেখা দিয়েছিল তা অনেকটাই দূরীভূত। নতুন করে বিপর্যয় না হলে বন্যার সম্ভবনা নেই বলেই জানানো হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন স্তরে।