ওয়েব ডেস্ক : করোনা আতঙ্ক কাটিয়ে দীর্ঘ ৫ মাস পর অবশেষে সেপ্টেম্বরেই লোকাল ট্রেন চালানোর সবুজ সংকেত দিল রাজ্য সরকার৷ বুধবার নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালুতে সম্মতি দিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সবুজ সংকেত পেতেই সেপ্টেম্বরের প্রথম দিক থেকেই ট্রেন চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে রেল। এবিষয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে শুক্রবার বেলা সাড়ে দশটায় শিয়ালদহ ডিভিশনের সব রেল আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন ডিআরএম। এ বিষয়ে ডিভিশনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, লকডাউনের আগে প্রতিদিন ট্রেন চালাতেন রেল চালকদের একাংশ। কিন্তু দীর্ঘ ৫ মাসে সেই অভ্যাসের অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। সেকারণেই মুখ্যমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়া মাত্রই শিয়ালদহ ডিভিশনের তরফে আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
এবিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন পাওয়ামাত্র স্বরাষ্ট্র ও রেল মন্ত্রকের তরফে নিয়ম বেঁধে ট্রেন চলাচলে সম্মতি দেবে বলে তাঁদের আশা। যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের ফলে তার থেকে রেল বছরে ৫০ হাজার কোটি টাকা আয় করে। কিন্তু লকডাউনের কারণে ৫ মাস ট্রেন বন্ধ থাকায় রেলের প্রচুর টাকা ক্ষতি হয়েছে। ফলে রাজ্য সরকারের সবুজ সংকেত পেয়ে কেন্দ্রের তরফে পুনরায় ট্রেন চালানোয় সম্মতি দেওয়া খুব স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে চূড়ান্ত প্রস্তুতি না নেওয়া থাকলে পরে বিপদের আশঙ্কা থাকতে পারে বলেই মনে করছে রেল কর্তৃপক্ষ। তাই পাকাপাকিভাবে ট্রেন চলাচলের আগে পুনরায় প্রস্তুত হয়ে থাকতে চাইছেন রেল কর্তারা।
জানা গিয়েছে, এমনি সময়ে শিয়ালদহ ডিভিশনের বিভিন্ন শাখায় প্রতিদি ৭৬৮টি লোকাল ট্রেন চলে, হাওড়ায় সে সংখ্যাটা ২১২। কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে প্রাথমিকভাবে দূরত্ব বজায় রাখতে এই মূহুর্তে ২৫% ট্রেন চালানো হবে। শুধু তাই নয় শিয়ালদহ স্টেশনের মূল গেটের পাশে স্টেশনে প্রবেশ ও বেরনোর আলাদা রাস্তা হতে পারে। সেই সাথে নিয়মিত যাত্রীদের থার্মাল স্ক্যানিং, নিয়মিত স্টেশন স্যানিটাইজ ছাড়াও ট্রেন চলাচলের নিয়ম বেঁধে দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি একেকটা স্টেশনে অদলবদল করে গ্যালপিন ট্রেন চলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
তবে অনেকেই মনে করছেন এত সুরক্ষাবিধি মেনেও পরিস্থিতি সামলানো অনেকটাই কঠিন হবে। তবে এবিষয়ে আরপিএফ-এর এক সহকারী কমান্ড্যান্ট জানিয়েছেন, ”এখনও তো রেলকর্মীদের জন্য লোকাল চলছে। মোট ট্রেন সংখ্যার ২৫ শতাংশ অর্থাৎ শিয়ালদহে ১৯১টি ও হাওড়ায় ৬৫টি।” প্রাথমিকভাবে এই সংখ্যা বাড়িয়ে একেবারে জরুরি কাজে যুক্ত যাত্রীদের যাতায়াতের সুব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নিচ্ছে রেলকর্তৃপক্ষ। এ জন্য ট্রেন চলাচল শুরু হলেই বিভিন্ন স্টেশনগুলির টিকিট কাউন্টার খোলা হবে। পাশাপাশি টিকিট চেকিং স্টাফদের ফেরানো হবে নিজেদের কাজে। ফলে এই ধরনের একাধিক বিষয় নিয়ে নানা পরিকল্পনার বিষয়ে আলোচনা করার জন্যই শিয়ালদহের ডিআরএম এর তরফে শুক্রবার রেল আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে বলেই মনে করা হচ্ছে।