নিজস্ব সংবাদদাতা: মঙ্গলবার রাতে এবং বুধবার সকালে করোনা আক্রান্ত হয়ে ২ বৃদ্ধের মৃত্যু হল খড়গপুর রেল হাসপাতালে। মৃত ওই দুই অবসর প্রাপ্ত রেল কর্মীর বয়স ৮০ এবং ৮৯ বছর বয়স বলে জানা গিয়েছে। এঁদের বাড়ি শহরের ভগবানপুর ও সুভাসপল্লী এলাকায় বলে রেল হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে। রেলসূত্রে আরও জানানো হয়েছে যে মৃত্যুর পর দুজনেরই আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ বলে জানা গিয়েছে।
দক্ষিনপূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনের জন সংযোগ আধিকারিক তথা সিনিয়র ডিভিসনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার আদিত্য চৌধুরী জানিয়েছেন, “মৃত দুজনই বার্ধক্য জনিত কারণে হাসপাতালে কিছুদিন ধরেই ভর্তি ছিলেন। তাঁদের কিডনি, ফুসফুস জনিত সমস্যা ছিল। মৃত্যুর পরে এঁদের কোভিড নিশ্চিত হয়েছে।”
ভগবানপুরের অবস্থিত মৃতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে ৮৯ বছর বয়স্ক ওই ব্যক্তির স্ত্রী পুত্র কেউই নেই। বহুদিন থেকেই শয্যাশায়ী ছিলেন বৃদ্ধ। ২৩তারিখ তাঁকে রেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বুধবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ মৃত্যু হয়েছে তাঁর। পরিবারকে রাত ১১টার সময় হাসপাতালে যেতে বলা হয়েছে। অনুমান করা হচ্ছে যেহেতু বৃদ্ধের করোনা পজিটিভ ধরা পড়েছে তাই প্রশাসনের উদ্যোগে দাহ কার্য করার আগে পরিবারের কাছ থেকে একটি অনুমতি পত্র নিয়ে রাখতে চায় পুলিশ।
অন্যদিকে সুভাসপল্লীর মৃত ব্যক্তির পরিবারের দাবি তাঁদের রুগি ১৫দিনের বেশি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এরমধ্যে বেশ কয়েকবার বৃদ্ধের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে এবং প্রতিবারই নেগেটিভ এসেছে। এবারেও তাঁর নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছিল কিন্তু রিপোর্ট আসার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পরই ফের তাঁর আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হয় যেখানে তাঁর পজিটিভ এসেছে। বৃদ্ধের পরিবারের বক্তব্য যেহেতু আগে হাসপাতালে থাকাকালীনই বারবার পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে তাই এখন পজিটিভ আসায় এটা প্রমানিত হয়ে যায় যে হাসপাতালে থেকেই আক্রান্ত হয়েছেন বৃদ্ধ।
যদিও এই আ্যন্টিজেন পরীক্ষায় আস্থা নেই পরিবারের। তাঁদের দাবি আরটি/পিসিআর পরীক্ষার জন্য যখন নমুনা পাঠানোই হয়েছে তখন ফলাফল আসা অবধি প্রশাসন যেন দেহ দাহ না করে।
এদিকে এই দুই মৃত্যূকে নিয়ে শহরে করোনা আক্রান্ত অবস্থায় মোট ১৭টি মৃত্যু হল যার মধ্যে রেল হাসপাতালেই মৃত্যু হল ৭ জনের। এই সাতজনের মধ্যে ১ জন বাদ দিলে বাকি প্রত্যেকেরই ষাটোর্ধ বয়সে এবং অন্য উপসর্গ বা কো-মর্বিডিটির কারনে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
অন্যদিকে বুধবার ও বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি ল্যাবে করোনা নমুনা পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। সারা জেলার নমুনা পাঠানো হয়েছে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে। বুধবার রাত পেরিয়েও সেই রিপোর্ট জেলায় আসেনি। বুধবার খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে মোট ৬০ জনের আ্যন্টিজেন পরীক্ষা করা হয়েছে যারমধ্যে ৬জনের পজিটিভ পাওয়া গেছে। এদিন আরটি/পিসিআর পরীক্ষার জন্য ৭০জনের কাছাকাছি নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে।