নিজস্ব সংবাদদাতা: কোথাও রাস্তার ওপর ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী, কোথাও আবার, দীর্ঘদিন পরিষ্কার করা হয়নি নর্দমা। ফল যা হওয়ার হয়েছে, রাস্তা উপচে জল ঢুকছে বাড়ির উঠোন ছড়িয়ে বাড়ির ভেতর অবধি। রাতভর পা তুলে বসে থাকতে হচ্ছে খাট কিংবা চেয়ারের ওপর। খুব প্রয়োজনে নামতে হলে ওই নোংরা নর্দমার জল ভেঙেই যেতে হচ্ছে এ ঘর থেকে ও ঘরে। খড়গপুর পৌরসভার ২৩নম্বর ওয়ার্ডের এই জল যন্ত্রনার ছবি অন্তত ১০টি ঘরের।
এলাকার বাসিন্দা সাধনা দাশ অধিকারী, সুবীর সিনহা, রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, গৌর রায়, স্বপন চক্রবর্তী প্রমুখ প্রায় দশটি বাড়ির বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভোট আসে আর ভোট যায় শুধু যায়না এই জল যন্ত্রনা।
ছেলে মেয়ে কচি কাঁচা নিয়ে এভাবেই গোড়ালি ডুবিয়ে টিকে থাকা বৃষ্টি হলেই। নালা নর্দমা পরিষ্কার হয়না। পলিথিন আর প্লাস্টিকে ভরে রয়েছে সব। দেখার কেউ নেই।
ভয়ানক অবস্থা ২ নম্বর ওয়ার্ডের আনন্দ নগরেরও। বর্ষার শুরুতেই যে জল জমেছিল তা আরও ফুলে ফেঁপে টইটম্বুর ২দিনের টানা বৃষ্টিতে। রাস্তাঘাট, মাঠ থেকে বাড়ির উঠোন সব জল থৈ থৈ করছে। হাঁটুর ওপর পোশাক তুলে নিত্যদিনের যাতায়ত। এক সময়ে নয়ানজুলি দিয়ে জল গড়িয়ে যেত কিন্তু এখন সেই নয়ানজুলি ভরিয়ে বড়বড় ব্যবসায়িক ইমারত।কিংবা ভারী বৃষ্টি শহরে নতুন কিছু নয়, নতুন হল অদ্ভুত প্রশাসনিক উদাসীনতা। দুর্যোগের সময়, দুর্ভোগের সময় আগে দেখা যেত নেতা, কাউন্সিলরদের কিন্তু এখন কারও দেখা নেই।
আনন্দ নগরের বাসিন্দা গড়বেতা কলেজের অধ্যাপক পৃথ্বীশ কুমার হাইত জানিয়েছেন, “একটা দ্বীপের বাসিন্দা হয়ে রয়েছি আমরা। চারপাশ ভরাট হয়ে গেছে কোনো নিকাশি ব্যবস্থা ছাড়াই। নয়ানজুলি ভরাট করে গড়ে উঠেছে বড় আবাসন, শপিং মল কিংবা ব্যবসায়িক ভবন। আমাদের কথা কেউ ভাবেইনা। রাস্তাঘাট, মাঠ জলে ভরে রয়েছে, আপাতত জল ভেঙেই যাতায়ত। আর একটু জল বাড়লে উঠোনেও চলে আসতে পারে।” অধ্যাপকের প্রস্তাব মহানালা করে জল উত্তর দিক দিয়ে বের করে দেওয়া যায় কিন্তু কে শুনবে এই প্রস্তাব?
সেই একই ছবি ইন্দার খড়্গেশ্বর মন্দির সংলগ্ন এলাকায়। নতুন উৎপাত ফ্ল্যাট বানানোর ধুম। গোটা এলাকা জুড়ে বালি, চিপস, ইট ঢেকে দিয়েছে নালা নর্দমা। জল গলে যাওয়ার উপায় নেই। রাস্তা উপচে জল তাই বাড়ির উঠোনে।
ওদিকে ভাসছে ২৯ নম্বর ওয়ার্ড। ছোটট্যাংরা হয়ে ঝুলি যাওয়ার রাস্তা ডুবে আছে হাঁটু জলে। করোনা পর্বে সংক্রমিত শহর আর সেই সংক্রমনের আবর্জনা বহন করে ভাসছে অভিভাবকহীন শহর। জল যন্ত্রনার এই ভোগান্তির শহরে নাগরিকদের পাশে দেখা মিলছেনা জনপ্রতিনিধিদের।