নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্তমান সরকারের আমলে যে সেচদপ্তর তথা অন্য আধিকারিকরা কোনও কাজই করেনি তা নিজের মুখেই স্বীকার করে নিলেন তৃণমূলের রাজ্য সভার সাংসদ তথা একদা সবং বিধায়ক মানস ভূঁইয়া। এই সরকারের আমলে ফের যে সবং বন্যার মুখোমুখি তা কার্যত জানিয়েই দিলেন ভূঁইয়া। সোমবার সবংয়ের বন্যা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে আসা পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা শাসক ডক্টর রশ্মি কমল এবং জেলার পুলিশ সুপার দীনেশ কুমারের কাছে সাংসদ জানিয়ে দেন নদীগুলিতে তিনফুটের ওপর পলি জমে আছে, কচুরিপানায় ভরে আছে। ফলে জলধারনের ক্ষমতা বিপজ্জনক ভাবে কমে যাচ্ছে। তিনি আরও জানান নদী পাড়ে ও নদী বক্ষে গড়ে ওঠা বেআইনি ইটের ভাটা সর্বনাশ করছে নদী গুলির আর এরা সরকারকে কোনও রাজস্ব দিচ্ছেনা। ফলে ব্যাপক রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে সরকারের।
উল্লেখ্য গত কয়েকদিন ধরে মুষলধারে বৃষ্টির জন্য সবং ব্লকের ১৩ নম্বর বিষ্ণুপুর অঞ্চলের নাগলকাটায় থাকা একটি কাঠের সেতু জলের তলায় চলে যাওয়ায় ভগবানপুর, ময়না, পটাশপুর এই তিনটি এলাকা সবং থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং সবং এর প্রায় ১০ হাজার মানুষ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। নদীতে কচুরিপানা থাকায় নৌকা চালানোতে অনেকটাই সমস্যা হচ্ছে। এমনটাই জানান ভূঁইয়া। সোমবার এই পরিস্থিতি পরিদর্শনে যান রাজ্য সভার সাংসদ মানস ভুঁইয়া, জেলার জেলা শাসক ও জেলার পুলিশ সুপারের সাথে উপস্থিত ছিলেন জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি সহ অনান্যরা।
সেখানেই ভূঁইয়া খোদ সেচ দপ্তরের অধিকারিককেই স্বাক্ষী মেনে জানিয়ে দেন কোনও কাজই করছেনা সেচ দপ্তর। এদিন সাংবাদিকদেরও ভূঁইয়া জানিয়ে দেন গত আট বছর আগে কেলেঘাই, কপালেশ্বরী, বাঘুই খালের যে সংস্কার হয়েছিল তারপরে এক ছটাকও মাটি কাটেনি সেচ দপ্তর ফলে তিন চার ফুট করে নদীগর্ভ উঁচু হয়ে জলস্ফীতি ঘটাচ্ছে। মানসের এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে সবংয়ের বিরোধী দলগুলি জানিয়েছে শুধু নদী সংস্কারের বিষয় নয়, এই সরকারের আমলে কোনও উন্নয়ন মূলক কাজই হচ্ছেনা।
তাঁদের দাবি, সবংয়ের ভেতরে গিয়ে দেখলে বোঝা যাবে ঠিকাদারি রাজে রাস্তাঘাটের কী অবস্থা। যার প্রতিবাদ করলে গ্রেপ্তার হতে হয় বিরোধীদের। বিজেপির জেলা নেতা সবংয়ের শান্তুনু সাহু বলেন, “সাংসদকে ধন্যবাদ এই স্বীকারোক্তির জন্য তবে শুধু সেচ নয় কোনোও ক্ষেত্রেই কোনও কাজ করেনি এই সরকার।” ইটভাটা প্রসঙ্গে সাহু বলেন, স্থানীয় শাসকদলের নেতাদের তোলা দিয়ে চলছে ইটভাটা গুলি। পুলিশ তদন্ত করলেই জানতে পারবে কোন ভাটায় কোন নেতার টিকি বাঁধা রয়েছে।”
এদিন এলাকা পরিদর্শনের পর কি কি করা যায় তা নিয়ে সবং বিডিও অফিসে একটি আলোচনায় বসেন প্রশাসনিক কর্তারা। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির কথা জানান পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জেলা শাসক ডক্টর কমল। পাশাপাশি দ্রুততার সঙ্গে কচুরিপানা সরানোর কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।