নিজস্ব সংবাদদাতা: সারা রাজ্যের সঙ্গেই বৃহষ্পতি আর শুক্রবারের লকডাউন শুরু হয়ে যাচ্ছে খড়গপুর শহরে কিন্তু তার মধ্যেও আলাদা পিচ খড়গপুরের আর সেই কঠিন পিচে চওড়া ব্যাট হাতেই রাস্তায় নামতে চলেছে খড়গপুর পুলিশ। বুধবার সারা দিনই শহর জুড়ে মাইক প্রচার সেরে ফেলেছে পুলিশ। সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি খড়গপুর শহরের ৩৫টি ওয়ার্ডের গলি থেকে রাজপথ পুলিশের মাইক জানিয়ে দিয়েছে বৃহস্পতি আর শুক্রবারে কোনও উপযুক্ত প্রয়োজন ছাড়া জনতা যেন ঘরের বাইরে পা না রাখেন। যদি বের হন এবং পুলিশের চোখে সেই প্রয়োজন যদি যথেষ্ট বলে না মনে হয় তাহলে কড়া আইনী ব্যবস্থার মধ্যে পড়তে হবে আইনভঙ্গকারিকে।
২দিনের লকডাউনের আগেই বিশেষ মিটিং করে ফেলেছেন টাস্কফোর্স কমিটির সদস্যরা। মহকুমা প্রশাসন, পুলিশ ও স্বাস্থ্য আধিকারিকদের ওই মিটিংয়ে ২দিনের লকডাউন বলবৎ করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এ ব্যাপারে পুলিশকে পুরোপুরি স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। খড়গপুর গ্রামীন এবং শহর পুলিশ নিজের নিজের মত করে পরিকল্পনা সাজিয়ে নিয়েছে। শহরের বাইরের অংশে দুটি জাতীয় সড়ক ও রাজ্য সড়ক গুলির মুখে নিয়ন্ত্রন নেবে খড়গপুর গ্রামীন পুলিশ। শহরমুখী যানগুলির ওপর নজরদারি চালাবেন গ্রামীন পুলিশ কর্মীরা। উপযুক্ত কারন ছাড়া কোনও গাড়িই শহরে প্রবেশ করতে পারবেনা। পাশাপাশি খড়গপুর পৌরসভার যে এলাকাগুলি খড়গপুর গ্রামীন পুলিশের আওতায় পড়ে যেমন পুরানো মালঞ্চর কিছু অংশ, রবীন্দ্র পল্লী, তালবাগিচা, দীনেশ নগর ইত্যাদি জায়গার বাজার হাট, পাড়ার মোড়, জনবসতির ভেতরে থাকা দোকান পাটের ওপর নজরদারি করার জন্য টহল দেবে গ্রামীন পুলিশের দল।
অন্যদিকে রেল এলাকা সহ খড়গপুর পৌর এলাকা, জনবহুল থাকে এমন বাজার, শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে মোতায়েন থাকছে পুলিশ। পাশাপাশি গোটা শহর জুড়ে বিশেষ ঝটিকা হানার জন্য তৈরি থাকছে শহর পুলিশের বিশেষ বাহিনী। জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খড়গপুরের দায়িত্বে থাকা কাজী সামসুদ্দিন আহমেদ এবং খড়গপুরের এসডিপিও সুকোমল কান্তি দাস নিজের নিজের বাহিনী নিয়েই পুরো শহরে টহল দেবেন। পুরো ব্যবস্থার ওপর বিশেষ নজরদারিতে থাকছেন খড়গপুরের মহকুমা শাসক বৈভব চৌধুরী। সতর্ক থাকছে খড়গপুর শহর পুলিশের কন্ট্রোলরুম।
খড়গপুর পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “যে হারে সংক্রমন বেড়েই চলেছে কিন্তু মানুষের বেপরোয়া ভাব কিছুতেই কাটছেনা তাই কঠোর হতে হচ্ছে পুলিশকে। অযৌক্তিক কারনে রাস্তায় বের হওয়ার চেষ্টা করলে গ্রেপ্তার, বাইক কিংবা চারচাকা সবই বাজেয়াপ্ত করা হবে।” উল্লেখ্য খড়গপুর মোট আক্রান্তের সংখ্যা আর কয়েকঘন্টার মধ্যেই ৩০০ ছুঁতে চলেছে। এরমধ্যে বেশিরভাগই ভাল হয়ে উঠলেও মাত্র তিন মাসেই ১৪টি মৃত্যু দেখেছে শহর আর তারমধ্যে ৫টি মৃত্যু হয়েছে গত ৪৮ ঘন্টায়।
অন্যদিকে একটু হলেও স্বস্তির হওয়া এই যে বুধবার খড়গপুরের জন্য কোনও পজিটিভ রোগি আসেনি কিন্তু সেই স্বস্তির মধ্যেই কাঁটা হয়ে রয়েছে ১১২টি অমীমাংসিত নমুনা। সোমবার এবং মঙ্গলবার এই ২দিনে প্রায় ৩৫০টি নমুনা পাঠানো হয়েছিল মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের ভাইরোলজি ল্যাবে যার মধ্যে এই অমীমাংসিত নমুনা এসেছে। বৃহস্পতিবার সেগুলি পৃথক ভাবে পরীক্ষা হবে যার থেকে বড় সংখ্যায় পজিটিভ ফলাফল আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখেই দুদিনের লক ডাউন বলবৎ করতে ময়দানে নামছে পুলিশ।