নিজস্ব সংবাদদাতা: বাড়ি উত্তর ২৪ পরগনা, শ্বশুরবাড়ি খড়গপুর শহরের পুরিগেট এলাকায়। কাজ করেন ঝাড়খণ্ডের বোকারোতে, রেল দপ্তরে। কিছুদিন আগে উত্তর ২৪পরগনার নিজের বাড়িতে ছিলেন। এরপর স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে চলে আসেন শ্বশুরবাড়িতে। এখানে আসার পর শরীর খারাপ লাগছিল তাই খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন। ১২ তারিখ নমুনা দেন। ১৪ তারিখ তার ফল আসার কথা সন্ধ্যা বেলায় কিন্তু তার আগেই বিকালেই গাড়ি ভাড়া করে বোকারো রওনা দিয়েছেন। বলে গেছেন, এখানকার পরীক্ষায় ভরসা নেই, বোকারো তে গিয়ে পরীক্ষা করিয়ে ওখানকার হাসপাতালে ভর্তি হবেন।
পুলিশ জানিয়েছে, অত্যন্ত দায়িত্ব জ্ঞানহীন আচরন। যদিও শ্বশুরবাড়িতে স্ত্রী সন্তানকে রেখে গিয়েছেন তবুও তাঁর থেকে আক্রান্ত হতে পারেন গাড়ির চালক। তারপর অন্য রাজ্যে গিয়ে সেখানকার মানুষদের আক্রান্ত করবে। যদি না শুরু থেকেই কোয়ারেন্টাইন না করা যায়, এভাবেই সংক্রমন ছড়াচ্ছে দেশ জুড়ে।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি উত্তর ২৪পরগনা থেকে আক্রান্ত হয়ে এসেছেন। ছিলেন শ্বশুরবাড়িতে। এখানে এসে কোয়ারেন্টাইন হননি। ফলে নিজের স্ত্রী সন্তান ছাড়াও শ্বশুরবাড়ি লোক আক্রান্ত হয়েছেন কিনা জানা যাবে একমাত্র পরীক্ষার পর। যদি শ্বশুরবাড়ির লোকেরা আক্রান্ত হন তবে শ্বশুরবাড়ির পাড়ার লোকেরা আক্রান্ত হয়ে থাকতে পারেন। স্বাস্থ্য দপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, এভাবেই ছড়িয়ে পড়তে পারে গোষ্টি সংক্রমন। কোয়ারেন্টাইনের উদ্দেশ্যেই হল করোনা সংক্রমনের শৃঙ্খলাটা ভেঙে ফেলা। দুর্ভাগ্য মানুষের অসচেতনতা সেই উদ্দেশ্যে অনেক জায়গাতেই সফল হতে দিচ্ছেনা। যার বড় উদাহরণ হল বৃহস্পতিবারের এই ঘটনা।
মঙ্গলবার রেল এবং খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালের সংগৃহিত নমুনা পরীক্ষার ফলাফল এসেছে শুক্রবার। যেখানে দেখা যাচ্ছে ১৫ জন পজিটিভ যার ২জন খড়গপুর গ্রামীন এলাকার বাকি ১৩ জনই শহরের। দেখা যাচ্ছে এই ১৩ জন গোটা খড়গপুর শহর জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে। যা একসময় শহরের একটি এলাকার বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলেই মনে হচ্ছিল এখন তা স্থায়ী ভাবে গেড়ে বসছে। শহরের যে যে এলাকায় এদিন আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে সেই জায়গাগুলি হল মালঞ্চ রোডের ওপর পাটোয়ারী মিল এলাকা, মালঞ্চ রোড,
খরিদা, শ্রীকৃষ্ণপুর, সুভাসপল্লী, পুরিগেট, ঝাপেটাপুর, বারবেটিয়া, দেবলপুর, ইন্দা কমলাকেবিন ,সোনামূখী ঝুলি, পুরি গেট। এরমধ্যে দেবলপুরে ২জন আক্রান্ত পাওয়া বেছে। শহরের বাইরে আক্রান্তর খবর এসেছে জফলা,সুলতান বসন্তপুর এলাকা থেকে ।
আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি কর্মী, কাপড় ও চালের দোকানি থেকে শুরু করে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক, সিভিক ভলেন্টিয়ার ইত্যাদি নানান পেশার মানুষ ছিলেন । করোনা আক্রান্তদের মধ্যে একজন ক্যানসার আক্রান্ত রোগীও রয়েছেন। এদিন শহরের ১৩ জন আক্রান্ত নিয়ে শহরের সর্বমোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৪৫।