নিজস্ব সংবাদদাতা: চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ শুরু হয়ে গেছে। সম্ভবত আগষ্ট মাসেই প্রকাশ পেতে চলেছে রাজ্যের ব্লক সভাপতিদের নতুন তালিকা। ২৩ শে জুলাই মমতা ব্যানার্জীর হাত ধরেই প্রকাশ পেয়েছিল জেলা সভাপতি, বিধানসভা ভিত্তিক কো-অর্ডিনেটর আর রাজ্য কমিটির তালিকা। আগামী ২০২১বিধাবনসভার আগে এবার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ব্লক গুলির জন্য নতুন সভাপতি আর কমিটি তৈরি করা। বলাবাহুল্য জেলা সভাপতি পদের ক্ষেত্রে যেমনএক এবং অদ্বিতীয় শর্ত ছিল জেলা গুলিতে অভিষেক ব্যানার্জীর আধিপত্য বজায় রাখতে অভিষেক অনুগামীদের সামনে নিয়ে আসা ব্লক স্তরেও সেই কাজটি আরও নিবিড় ভাবে করা হবে। দক্ষিনবঙ্গের ব্লকগুলিতে, জঙ্গলমহলে যেখানে যেখানে শুভেন্দু অধিকারীর নূন্যতম অনুগামী রয়েছে তাঁদের নির্মমভাবে ছেঁটে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে, এই পর্যায়েও তা অব্যাহত থাকবে এবং নিশ্চিত করা হবে।
দলের মধ্যে অভিষেক ব্যানার্জীর একক নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ব্লক সভাপতির বাইরে কোনও সমান্তরাল পদ থাকছেনা। কার্যকরী সভাপতি, চেয়ারম্যান আর আহবায়ক পদের অস্তিত্ব বিলুপ্ত করা হচ্ছে। ব্লকের সভাপতিই হবেন সর্বময় কর্তৃত্ব বা সিঙ্গেল কমান্ড। কোনও বিধায়ক সভাপতি হবেননা। জেলা নয় রাজ্যই চূড়ান্ত করবে ব্লক বা শহর সভাপতির নাম। জেলা সভাপতি নাম পাঠাবেন মতামত দেবে পি কে বাহিনী। এই পি কে বাহিনীর ওপরই কার্যত ভার পড়েছে শুভেন্দু গন্ধ খুঁজে বের করার।
তৃণমূলের ইতিহাসে প্রথমবার, গোটা পশ্চিমবঙ্গে ব্লক সভাপতিদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশিত করবে শাসকদল। চলতি মাসেই এই তালিকা প্রকাশিত হবে বলে জানানো হয়েছে। সেজন্য জেলা সভাপতিদের কাছ থেকে ব্লক সভাপতিদের নামের তালিকা চেয়ে পাঠিয়েছে শীর্ষ নেতৃত্ব। রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে জমা দিতে হবে সেই তালিকা। তার পর তাতে চূড়ন্ত শিলমোহর দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এতদিন জেলায় বসেই তৃণমূলের ব্লক সভাপতিদের নাম ঘোষণা করতেন জেলা সভাপতিরা। এই নিয়ে অশান্তির আশঙ্কা থাকলে জেলায় গিয়ে নাম ঘোষণা করে আসতেন দলের পর্যবেক্ষকরা। সাম্প্রতিক রদবদলে দলের পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বদলে যোগ হয়েছে কো-অর্ডিনেটর পদ। সূত্রের খবর, এবার ব্লক সভাপতি বাছাই করতে জেলা সভাপতি ও কো-অর্ডিনেটরদের পাশাপাশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে বিধায়কদের মতকেও। কারণ, ব্লক সভাপতির সঙ্গে সংগঠনের কাজ করতে হয় বিধায়ককেই। আর বহু জায়গাতেই দুজনের বিবাদে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ চরমে উঠেছে।
যদিও তৃনমূল সূত্রে বলা হচ্ছে , এবার দলের ব্লক সভাপতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছ ও দুর্নীতিমুক্ত ভাবমূর্তির ওপর জোর দেবে তৃণমূল। আমফানের ত্রাণ-সহ অন্যান্য দুর্নীতিতে যাদের নাম জড়িয়েছে তাদের সরিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। হিসাব বলছে এটা কথার কথা মাত্র আদতে অভিষেকায়নই আসল গুরুত্ব পাবে। কারন দুর্নীতি ইত্যাদি নিয়ে খোঁচাখুঁচি করতে গেলে প্রায় সমগ্র দক্ষিণ ২৪পরগনার ব্লক কমিটির সভাপতি দের সরাতে হবে। সেটা সম্ভব হবেনা কারন ওখান কার সমস্ত সভাপতিই অভিষেক অনুগামী।
২০২১, মমতা ব্যানার্জীর জায়গায় অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ই মূখ্যমন্ত্রী। যদিও এবারও মমতাকেই সামনে রেখেই লড়াই করবে দল। প্রশান্ত কিশোরের কাজ অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে ধিরে ধিরে দলে এবং রাজ্যে অভিষিক্ত করা। জেলার পর ব্লক দিয়ে যা শুরু হবে তা শেষ হবে বিধায়ক পদ প্রার্থী নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে। আর হ্যাঁ, আরেকটি কাজ বাকি রয়েছে তা হল পুলিশে রদবদল, যেটার প্রক্রিয়া সময় মত শুরু হবে।