ভীষ্মদেব দাশ, খেজুরি (পূর্ব মেদিনীপুর): লকডাউনে ব্যাস্ত ৭২বছরের হস্তশিল্পী তুষার কান্তি মাইতি। বিশ্রাম নেই তাঁর। বয়সও বাধ সাধতে পারেনি শিল্পীর শিল্পকলায়। লকডাউনে বিক্রি বাট্টা কম থাকলেও নতুন কিছু তৈরির চেষ্টায় সারাদিন ব্যাস্ত তিনি। ১৯৭১সালে বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধের অস্থির সময়ে বন্ধ হয়েছিল পড়াশোনা, এখন লকডাউনে বন্ধ বিক্রি-বাট্টা। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ভূপতিনগর থানার চিড়াকূটির বাসিন্দা তুষার বাবু।
জেলাজুড়ে হস্তশিল্পে তাঁর খ্যাতি ছড়িয়েছে। নারকেল গাছের মোচা, মালা দিয়ে নৌকা, লঞ্চ আবার বাঁশ দিয়ে ফুলদানি, ঠাকুরের মূর্তি নজরকাড়া। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ডিআইসি অন্তর্ভুক্ত হস্তশিল্পী তুষার কান্তি মাইতি। ডিআইসি-র সুবাদে হস্তশিল্প প্রদর্শনী নিয়ে তুষার বাবু পৌঁছে যান হস্তশিল্প প্রদর্শনী মেলা গুলিতে। নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ, পালতোলা জাহাজ, ফুলদানি, ধুপদানি, পেনদানি, অ্যাস্ট্রে থেকে শুরু করে পালকি, সারথি কৃষ্ণের রথে অর্জুন দর্শকদের নজরকাড়ে। বিক্রি হয় ভালো দামে। মেলার পাশাপাশি তুষারবাবুর বাড়ি থেকে নৌকা, লঞ্চ, জাহাজ, পালতোলা জাহাজ, ফুলদানি, ধুপদানি, পেনদানি, অ্যাস্ট্রে থেকে শুরু করে পালকি, সারথি কৃষ্ণের রথে অর্জুন নিয়ে যান দিঘার ব্যাবসায়ীরা। পাশাপাশি সারাবছর বিক্রি হয় পাঁউশী মনচাষা পর্যটনকেন্দ্রেও।
বর্তমানে করোনা সংক্রমন রুখতে চলছে লকডাউন। আর লকডাউনের ফলে ভাটা পড়েছে পর্যটন শিল্পে। বিক্রিও কমেছে। কিন্তু বিক্রি কমলেও বন্ধ হয়নি উৎপাদন। ৭২বছর বয়সে শৌখিন শিল্পকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। তুষার বাবু বলেন, ১৯৭১সাল থেকে লড়াই দেখছি। তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশে সাময়িক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছিলেন। ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে স্তব্ধ হয়েছিল স্বাভাবিক জীবনযাপন।
বাজকুল কলেজে প্রথম বর্ষ পড়ার সময়ে বন্ধ হয়েছিল কলেজ, পড়াও। সেই স্মৃতি আজ মনে পড়ছে। লকডাউনের মতো ১৯৭১ সালের সেই অস্থির সময়ে পড়া বন্ধ হয়েছিল আমার। আর এখন লকডাউনে ব্যাবসা লাটে উঠেছে। তবে খুব শিঘ্রই স্বাভাবিক জীবনযাপন, বিক্রি বাট্টা শুরু হবে আশাকরি।