নিজস্ব সংবাদদাতা: মাসের পর মাস, বছরের পর বছর ধরে ওজনে কম সামগ্রী পাচ্ছেন রেশন গ্রাহকরা। সরকারি বরাদ্দ প্রাপ্য রেশন কম পাচ্ছেন গ্রাহকরা। ফুলে ফেঁপে উঠছেন রেশন ডিলার কিন্তু দোষ ডিলারের নয়, বালতির। হাতে নাতে এই বিপুল কারচুপি ধরা পড়ার পর এমনটাই বললেন রেশন ডিলার। বললেন তিনি সজ্ঞানে সামগ্রী কম দেননি তবে হতে পারে বালতিটা পরিমানে ছোট! কম দেওয়ার অভিযোগে রেশন দোকানে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের। রেশনে জালিয়াতি করা হচ্ছে এমন অভিযোগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবংয়ের ৩নং দাঁররা অঞ্চলের কলসবাড় এলাকার চকচাঁদপাল গ্রামের রেশন ডিলার অমল কুমার বেরার রেশন দোকানে হানা দেয় ক্ষুব্ধ গ্রাহকের দল। উত্তেজিত জনতা ভাঙচুর চালায় ওজন মেশিন সহ বেশ কিছু সামগ্রী।
গ্রাহকরা জানিয়েছেন, প্রত্যেক গ্রাহককেই তাঁর ন্যায্য পাওনা থেকে এক দেড় কেজি করে সামগ্রী কম দেওয়া হচ্ছে। গ্রাহকদের দাবি রেশন দোকান থেকে সামগ্রী নেওয়ার পর তারা বাইরে গিয়ে ওজন করিয়ে রীতিমত হাতে নাতে প্রমান পেয়েছেন। রেশন ডিলারের বাড়ির সামনে এসে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন জনতা। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে সবং থানার পুলিশ। বিক্ষোভ কারীদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ আধিকারিকরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। পুলিশ আধিকারিকদের দেখতে পেয়ে বিক্ষোভকারীরা ক্ষোভ উগরে দেয়। তাঁরা জানান, শাসকদলের কয়েকজন ক্ষমতাবান নেতার সঙ্গে রীতিমত বোঝাপড়া রয়েছে এই রেশন ডিলারের।
দীপক রানা নামে এক বিক্ষোভকারী অভিযোগ এভাবেই অনেকদিন ধরেই জনসাধারণকে রেশনের প্রাপ্য খাদ্য সামগ্রী কম দিচ্ছে রেশন ডিলার অমল কুমার বেরা। অবিলম্বে এই রেশন ডিলারের লাইসেন্স বাতিল করা হোক। জনতা আরও দাবি করে সরকারি বরাদ্দ তছনছ করার অভিযোগে গ্রেপ্তার করতে হবে ওই ডিলারকে।
অভিযুক্ত রেশন ডিলার অমল কুমার বেরা বলেন আমি চাল গম কোন কম দেইনি।আমার বালতিটি ওজনে কম রয়েছে বালতিতে মাপতে গিয়ে কম হয়েছে। আমি বলেছি যদি ভুল বশত কম হয়ে থাকে আমি বকেয়া রেশন গ্রাহকদের মিটিয়ে দেবো করেন অভিযুক্ত রেশন ডিলার।
পুলিশ আধিকারিকরা জনতাকে আশ্বস্ত করেন যে, এ বিষয়ে উপযুক্ত দপ্তরের আধিকারিকদের তারা জানাবে এবং তাঁদের রিপোর্ট অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহন করবে পুলিশ। পুলিশের আশ্বাসে জনতা বিক্ষোভ প্রত্যাহার করে হুঁশিয়ারি দিয়ে যায় প্রশাসন উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে জনতাই বুঝে নেবে। পুলিশের পক্ষে জনতাকে জানিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট খাদ্য পরিদর্শককে জানিয়ে দেওয়া হবে বিষয়টি।
বিষয়টি নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি জানান, ‘ করোনা ও লকডাউন পরিস্থিতে রাজ্যের মূখ্যমন্ত্রী আপামর মানুষের জন্য বাড়তি খাদ্য শস্য বরাদ্দ করেছেন কোনও কোনও রেশন ডিলার তাই মনে করছেন মানুষের বরাদ্দ লুট করা যাবে। কিন্তু তাঁদের বোঝা দরকার যে সরকার এই বিষয়ে যথেষ্ট নজরদারিরও ব্যবস্থা করেছেন। বিধি ভঙ্গের দায়ে ইতিমধ্যে অনেকেরই ডিলার শিপ বাতিল হয়েছে, অনেকে গ্রেপ্তার হয়েছেন। এক্ষেত্রেও কেউ যদি দোষী প্রমাণিত হয় তাহলে আমরা প্রশাসনিকভাবে কঠোরভাবে ব্যবস্থা নেব। বিষয়টি ইতিমধ্যেই খাদ্য নিয়ামকের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।”