নিজস্ব সংবাদদাতা: আরও একজন করোনা আক্রান্তের মৃত্যু হল সবংয়ে। সপ্তাহ খানেক হল করোনা নিয়ে মৃত্যু হয়েছে কুন্ডলপালের ৬৭ বছরের এক রেশন ডিলারের তারই মধ্যে দ্বিতীয় বলি করোনার আর এবার মৃত ব্যক্তির বয়স হয়েছিল মাত্র ৫৫ বছর। মঙ্গলবার প্রবল কাশি আর সামান্য জ্বর নিয়ে সবং গ্রামীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল বিষ্ণুপুরের ওই বাসিন্দাকে। ওই দিনই তাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বুধবার অবস্থা সঙ্কট জনক হওয়ায় মেদিনীপুরে স্থানান্তরিত করা হয়। বাড়ির লোকেরা তাঁকে নিয়ে মেদিনীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা হন কিন্তু জামনার কাছে মৃত্যু হয় তাঁর।
জানা গেছে বিষ্ণুপুরের পশ্চিমবাঁধ গ্রামের ওই বাসিন্দাকে বাড়ির লোকেরা বাড়িতে ফেরত নিয়ে যায় দাহকার্য করার জন্য কিন্তু গ্রামের মানুষ আপত্তি জানায় করোনার ফলাফল ছাড়া শ্মশানে দাহ করতে দিতে। বৃহস্পতিবার সকালে অমীমাংসিত ফল আসায় দেহ বাড়িতেই ছিল। ওই দিনই সন্ধ্যায় ফল আসে করোনা পজিটিভ। এরপরই মেদিনীপুর থেকে স্বাস্থ্য দপ্তরের বিশেষ গাড়ি এসে মৃতদেহ নিয়ে যায় সরকারি উদ্যোগে সৎকার করার জন্য। কী করে ওই ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হলেন জানাতে গিয়ে সবং ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘যতদুর জানতে পারা যাচ্ছে তা হল দিন ১৫ বা তার কয়েকদিন আগে চোখের সমস্যা নিয়ে কলকাতায় গেছিলেন চিকিৎসককে দেখাতে। হয়ত সেখন থেকে সংক্রমিত হয়ে থাকতে পারেন।
বৃহস্পতিবার দিনটি যথেষ্টই খারাপ খবর বয়ে এনেছে সবংয়ের জন্য । এদিন ওই মৃত ব্যক্তি সহ মোট ৫ জন নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে লাড়ো গ্রামে আক্রান্ত হয়েছেন এক গ্রামীন চিকিৎসক। বেশ কয়েকদিন ধরেই ওই চিকিৎসক জ্বরে ভুগছিলেন বলে জানা গেছে। জ্বর না কমায় তিনিও নমুনা করোনা পরীক্ষার জন্য নমুনা দিয়েছিলেন, বৃহস্পতিবার তাঁরও পজিটিভ আসে। ৪৫ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক খুবই জনপ্রিয়।তাই তাঁর রুগির সংখ্যা বেশি। প্রশ্ন এখন তাঁর মারফৎ আরও কেউ কেউ সংক্রমনের আওতায় এলেন কিনা?
মোহাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসুলিয়াতে এক ৩৭ বছর বয়সী আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। এই ব্যক্তি কলকাতার একটি মিষ্টি দোকানে কাজ করতেন এবং ঘনঘন বাড়ি কলকাতা যাতায়ত করতেন। কয়েকদিন আগে থেকেই জ্বরে ভুগছিলেন। জ্বর ভাল না হওয়ায় করোনা সন্দেহে নমুনা দিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার এরও পজিটিভ আসে।
বাকি ২ নতুন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে সবং থানার দেভোগ গ্রাম পঞ্চয়েত এলাকায়। এই গ্রাম পঞ্চায়েতের বাড়জীবন গ্রামের এক ২৬ বছরের যুবক মূলত ইমিটেশন গহনা তৈরি করতেন বাড়িতে। তারপর সেই গহনা ঘাটাল সহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করতেন।
ওই গ্রাম পঞ্চায়েতেরই লুটুনিয়া গ্রামে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। ৪০ বছর বয়সের ওই ব্যক্তি গ্রামে গ্রামে পাউরুটি, বিস্কুট ইত্যাদি ব্রেকারি সামগ্রী বিক্রি করতেন বলেই জানা গেছে। এই নিয়ে সবংয়ে মোট ৩৮ জন আক্রান্তের সন্ধান মিলল। গ্রামীন চিকিৎসকের হাত ধরে নতুন করে করোনা ঢুকে পড়ল সারতা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। আর এই নিয়ে ১৩টি গ্রামপঞ্চয়েতের ৮ টিই করোনা সংক্রমনের আওতায় চলে এল। অল্প সময়ের ব্যবধানে ২টি মৃত্যু বুঝিয়ে দিল সংক্রমন কতটা তীব্র হতে চলেছে সবংয়ে।