নিজস্ব সংবাদদাতা: সময়ের নজির ভেঙে খড়গপুর শহরেই একদিনে ১১জনের করোনা সংক্রমনের রিপোর্ট আসল সোমবার। ২৪ঘন্টায় শহরে এত বড় সংখ্যায় করোনা আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা আগে পাওয়া যায়নি। ঘটনা হল এই ১১জনের মধ্যে ১০ জনই খড়গপুর রেল এলাকায় আক্রান্ত হয়েছেন আর সেই ১০ জনের ৬ জনই দক্ষিন পূর্ব রেলের খড়গপুর ডিভিশনাল কার্যালয়ের কর্মী যেখান থেকে ইদানিং একের পর এক সংক্রমনের ঘটনা ঘটেই চলেছে। স্বাভাবিক ভাবেই ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার বা ডি আর এমের অফিসেই করোনার ফাঁদ পাতা রয়েছে এমনটাই মনে করে আতঙ্কিত ওই অফিসের কর্মচারীরা।
সোমবার অন্যদিনের মতই খড়গপুর আর দক্ষিন পূর্ব রেল এই দুটি বিভাগে করোনা পরীক্ষার ফলাফল লিপিবদ্ধ করেছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। সেই তালিকায় মোট ১১জন কে করোনা পজিটিভ হিসেবে দেখানো হয়েছে যার মধ্যে খড়গপুর মহকুমা হাসপাতালে নমুনা দিয়েছিলেন এমন ৩ জনের পজিটিভ ফলাফল এসেছে যার মধ্যে ৫৭ বছর বয়সী একজন রেল সুরক্ষা বাহিনীর আধিকারিক রয়েছেন এবং তাঁর সাথে রেল সুরক্ষা বাহিনীরই এক ৩৮ বছরের জওয়ান রয়েছেন। এই তালিকায় ৩০ বছরের আরও এক যুবককে পজিটিভ বলা হয়েছে যার ঠিকানা রেলের সাউথ সাইড দেখানো হয়েছে তবে তিনি রেলের কর্মচারী কিনা নিশ্চিত করা যায়নি। তাই এই তালিকা থেকে ২জন নিশ্চিত হয়েছেন রেল কর্মচারী হিসাবে।
অন্যদিকে রেল হাসপাতালে নমুনা সংগ্ৰহ করা হয়েছে এমন ৮ জন কে পজিটিভ দেখানো হয়েছে। এই আটজনের মধ্যে ২জন নিউ সেটেলমেন্ট রেল আবাসনের বাসিন্দা। এঁদের মধ্যে ৩৭ বছরের এক যুবক ও ২৭বছরের এক যুবতী রয়েছেন। কয়েকদিন আগেই এই পরিবারের এক যুবক আক্রান্ত হয়েছিলেন। তিনি রেলের বাণিজ্য বিভাগের কর্মচারী ছিলেন। পরে তাঁর মা আক্রান্ত হন। এই দুজনও সেই সূত্রে আক্রান্ত হয়েছেন বলেই মনে করা হচ্ছে। বাদ বাকি ৬ জনই রেলের কর্মচারী। সর্বোচ্চ ৫৯ এবং সর্ব নিম্ন ৩৩ বছর বয়সের মধ্যে থাকা এই ৬ জনই ডি আর এম অফিসের ভেতরে কমার্শিয়াল অথবা কন্ট্রোল বিভাগের কর্মী।
উল্লেখ্য গত কয়েকদিন ধরেই এই দুটি বিভাগের কর্মীরা একের পর আক্রান্ত হয়েই চলেছেন। সোমবারের মাত্র ৪৮ ঘন্টা আগেই ওই অফিসে কর্মরত দুই যুবক যুবতী আক্রান্ত হয়েছেন এবং তার কয়েকদিন আগেই তিনজন এবং তারও আগে একজন দুজন করে আক্রান্ত হয়েছেন। সব মিলিয়ে দেখা যাচ্ছে গত কয়েকদিনের মধ্যে এক ডজনের বেশি কর্মচারী আক্রান্ত হয়েছেন এই দুটি বিভাগ থেকেই। ফলে আতঙ্কের বাতাবরন তৈরি হচ্ছে ডি এর এম দপ্তরের কর্মীদের মধ্যে।
উল্লেখ্য কিছুদিন আগে অবধি রেলের আরপিএফ বা রেল সুরক্ষা বাহিনীর ব্যারাক গুলোই ছিল সংক্রমনের উৎস। করোনার ভর কেন্দ্র ছিল ব্যারাক এখন সেই কেন্দ্র সরে ঘনীভূত হয়েছে ডি আর এম অফিসেই। একের পর এক আক্রান্তের খবর আসছে ওখান থেকেই।
কর্মীরা দাবি করেছেন অবিলম্বে গোটা অফিস স্যানিটাইজ করা হোক নতুবা কাজ করা মুশকিল হয়ে পড়বে। অন্যদিকে বারবার একটা এলাকা থেকেই এতজন আক্রান্ত হওয়ার পরও কেন ডি আর এম অফিস চত্বর কে কন্টেনমেন্ট জোন করা হচ্ছেনা প্রশ্ন উঠছে তা নিয়েও। এদিকে সোমবারের আক্রান্ত ধরে খড়গপুর শহরেই মোট আক্রান্তর সংখ্যা ১১১ জনে গিয়ে দাঁড়াল যার মধ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা প্রায় ৩০ জন।