ওয়েব ডেস্ক : করোনায় সংক্রমিত হয়ে মৃত্যু হল কলকাতা পুলিশের করোনা বিরোধী অভিযান ‘ফাইট এগেইন্সট করোনা’-র প্রথম সারির করোনা যোদ্ধার। প্রবল শ্বাসকষ্ট নিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে বাইপাসের ধারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। এরপর ক্রমে শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়ে শুক্রবার সকালে মৃত্যু হয় ওই ইন্সপেক্টরের। অভিজ্ঞান মুখোপাধ্যায় নামে কলকাতা পুলিশের ওই আধিকারিক ট্রাফিক ডিপার্টমেন্টের ইকুইপমেন্ট সেলের অফিসার-ইন চার্জ ছিলেন। তিনি কড়েয়া থানা এলাকাতেই থাকতেন।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েকদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন অভিজ্ঞানবাবু। এরপর ডাক্তারি পরামর্শে দু’বার করোনা পরীক্ষা করানো হলেও দুবারই রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু তৃতীয়বারের পরীক্ষায় জানা যায় অভিজ্ঞানবাবু করোনায় আক্রান্ত। এরপর কয়েকদিন যাবৎ বাড়িতেই কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন তিনি। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতে প্রবল শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। এই অবস্থায় প্রথমে তাঁকে মুকুন্দপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু তাঁর শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতি হলে দেরি না করে তাঁকে দ্রুত আনন্দপুরের অন্য এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর শুক্রবার সকাল ৮ টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়।
এদিকে সহকর্মীর অকাল মৃত্যুতে শুক্রবার সকাল থেকেই শোকস্তব্ধ কলকাতা পুলিশ। এদিন এই করোনা-যোদ্ধার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে কলকাতা পুলিশের তরফে একটি টুইট করা হয়, টুইটে লেখা হয়েছে, “ ইনস্পেক্টর অভিজ্ঞান মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যুতে আমরা গভীর ভাবে শোকাহত। কলকাতা ট্রাফিক পুলিশের ইকুইপমেন্ট সেলে অফিসার-ইন-চার্জ হিসাবে কর্মরত ছিলেন। একেবারে সামনের সারিতে থেকে লড়ছিলেন করোনা-যুদ্ধে। কোভিডে আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি ভর্তি হন হাসপাতালে। প্রাণ হারালেন আজ। আমাদের এই প্রয়াত সহযোদ্ধার পরিবারের হাতে রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য বিমা অনুযায়ী দশ লক্ষ টাকা তুলে দেওয়া হবে শীঘ্রই। প্রয়াত সহকর্মীর শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে আমরা আছি এবং থাকব সর্বতোভাবে।”
করোনা আবহে মানুষকে সচেতন করতে গিয়ে এর আগে কর্তব্যরত অবস্থায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বহু পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে কেউ কেউ এখনও চিকিৎসাধীন। অনেকে আবার সুস্থ হয়ে ইতিমধ্যেই কাজে যোগ দিয়েছেন। মানুষকে সচেতন করতে রাস্তায় নেমে তাদের কর্তব্যপালন করতে হচ্ছে। অনেক পুলিশকর্মী আবার হাসপাতালে কর্তব্যরত। ফলে নানান রোগীর মাঝখানে সারাদিন থাকার পর কোথা থেকে তাদের শরীরেও এই মারণ ভাইরাস বাসা বাঁধছে তা বোঝার উপায় নেই। ফলে পুলিশকর্মীরা প্রায় প্রতিদিনই আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে এবার প্রত্যেক পুলিশকর্মীকে আরও সুরক্ষাবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে লালবাজার। একইসাথে যথাযথ ভাবে হাত স্যানিটাইজ করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা-সহ বেশ কয়েকটি সুরক্ষাবিধির কথা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে লালবাজার।