নিউজ ডেস্ক: করোনার টিকা তৈরির কারখানায় বিধ্বংসী আগুন, আগুনে ঝলসে ৫ জনের মর্মান্তিক মৃত্যু। পুণের সেরাম ইনস্টিটিউটে এই বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। ইনস্টিটিউটের কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন তৈরির কারখানায় এই আগুন লাগে। দমকলের ১০টি ইঞ্জিনের প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও প্রাণ হারান ৫ জন। তবে ভ্যাকসিনের কোনও ক্ষতি হয়নি বলেই জানিয়েছেন সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা।
তিনি জানান, সংস্থার প্রশাসনিক ভবন-সহ যেখানে আগুন লেগেছে, সেখান থেকে অনেকটা দূরে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন মজুত রাখা হয়। তাই ভ্যাকসিনের ক্ষতি হওয়ার কোনও সম্ভাবনা নেই। কিন্তু পাঁচজনের মৃত্যুও কম শোকের নয়। শোকপ্রকাশ করেন পুনাওয়ালাও।ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর চেষ্টা করছে দমকলের ৯-১০টি ইঞ্জিন। ওয়ার্কশপে স্টোর করে রাখা টিকার ভায়াল নষ্ট হয়নি বলেই এখনও অবধি জানা গিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর নাগাদ সেরামের টার্মিনাল-১ গেটের কাছে আগুন লেগে যায়। সূত্রের খবর, দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে আগুন। গলগল করে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে গেছে চারপাশ। পাশাপাশি আট থেকে ন’টি বিল্ডিং আছে সেরামের ওয়ার্কশপের। একটিতে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে দমকল। দমকলের ১০টি ইঞ্জিন কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনলেও, একটি ভবনের ৬ তলায় পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। এনারা সকলেই নির্মাণকর্মী ছিলেন। তবে কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন সম্পূর্ণ অক্ষত বলেই জানা গিয়েছে।
তবে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ এখনও জানা যায়নি। দমকল কর্মীদের অনুমান, মঞ্জরি কমপ্লেক্স এলাকায় সম্প্রতি কিছু নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে আগুন লেগে থাকতে পারে। সেরামের সিইও আদর পুনাওয়ালা ট্যুইটে লেখেন, ‘সরকার ও দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে জানাচ্ছি, ভ্যাকসিনের কোনও ক্ষতি হয়নি। সম্পূর্ণ সুরক্ষিত রয়েছে ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড।’ অপর আরও একটি ট্যুইটে তিনি লেখেন, ‘খবর পেয়েছি, এই আগুনে পাঁচ জনের প্রাণ গিয়েছে। আমরা অত্যন্ত শোকাহত। মৃতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।’
পুণের মেয়র মুরলীধর মোহল জানিয়েছেন, দুপুর ২ টো ৫০ মিনিট নাগাদ আগুন লাগে সেরামে। তারপর ঘটনাস্থলে দ্রুত দমকলের ১০ টি ইঞ্জিন এবং দুটি ট্যাঙ্কার পাঠানো হয়। পুনের পুরনিগমের মুখ্য দমকল আধিকারিক প্রশান্ত রণপিসে জানান, ‘বাড়ির ভিতরে অনেকে আটকে ছিলেন। বেশ কয়েকটি তলায় ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তাতেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।’ পাঁচ জনের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশের পরই আদর পুনাওয়ালা জানান, ‘এরকম পরিস্থিতি সামলানোর জন্য সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ায় আরও কয়েকটি আস্তানা রাখা তৈরি রেখেছিলাম।’
প্রসঙ্গত, দেশজুড়ে কয়েক লক্ষ টিকার ডোজ সরবরাব করেছে সেরাম। ধাপে ধাপে টিকার ভায়াল পুণে থেকে এসে পৌঁছচ্ছে বিভিন্ন রাজ্যে। এর মধ্যেই সেরামের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের খবর সামনে আসতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।