Homeএখন খবরডেবরায় বান ডাকল করোনা, ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৩০ জনের কাছাকাছি, মাস্ক চেকিংয়ে...

ডেবরায় বান ডাকল করোনা, ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৩০ জনের কাছাকাছি, মাস্ক চেকিংয়ে রাস্তায় নামল পুলিশ

নিজস্ব সংবাদদাতা: শেষ অবধি ডেবরা এলাকায় বানের আকারই নিল করোনা

গত ৮ই অক্টোবর পশ্চিম মেদিনীপুরের ডেবরা এলাকায় আক্রান্ত হয়েছিলেন ৩০ জনেরও বেশি মানুষ। মনে করা হচ্ছিল সেটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা কিন্তু সাম্প্রতিক প্রবণতা বলছিল ডেবরায় নতুন করে সংক্রমন ছড়াচ্ছে। ১২ই অক্টোবর ‘দ্য খড়গপুর পোষ্ট’য়ের একটি প্রতিবেদনে গত সাতদিনের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে বলা হয়েছিল ডেবরায় বিপদ সীমায় রয়েছে করোনা সংক্রমনের গতি। ১২ই অক্টোবর রাতেই জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের আরটি/পিসিআর রিপোর্ট বলছে শুধু বিপদ সীমাই নয় কার্যত বান ডেকে দিয়েছে করোনা। শুধু আরটি/পিসিআর রিপোর্টেই ডেবরা এলাকায় ২৭ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে আর এবারেও বালিচক এলাকায় সংক্রমনের হার ভয়াবহ। বিপদের গভীরতা বুঝতে পেরেই ডেবরার বিভিন্ন প্রান্তে পুলিশ সক্রিয় হয়েছে মাস্ক বিহীন পথচারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। বিভিন্ন জনবহুল রাস্তায় ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে ডেবরা থানা।
১২ অক্টোবরের রিপোর্টেই বলা হয়েছিল ডেবরার বালিচক এলাকাতেই কার্যত বিস্ফোরণ ঘটেছে করোনা সংক্রমনের। সাম্প্রতিক কালের সংক্রমন মানচিত্রের এক পঞ্চমাংশ দখল করে রয়েছে বালিচক এলাকা। স্বাস্থ্য দপ্তরের তথ্য অনুপাতে এই আক্রান্ত বালিচক এলাকাকে তিনটি গ্রামপঞ্চায়েতের মধ্যে ধরা হয়েছে। এই গ্রামপঞ্চায়েত গুলি হল ডেবরা বালিচক, জালিমান্দা বালিচক এবং ডুঁয়া ১০/২ গ্রাম পঞ্চায়েত। ১২ অক্টোবরের রিপোর্ট অনুযায়ী শুধু বালিচক বা ডেবরা বালিচক ও ডুঁয়া ১০/২ বালিচক মিলিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন ৮ জন। এরমধ্যে ডেবরা বালিচক বা বালিচক সদরে একই পরিবারের ২ব্যক্তি সহ আক্রান্ত ৫ জন। ৫৪ এবং ৪৭ বছরের এক দম্পত্তি ছাড়াও ৫৫, ৪৮ এবং ৩২ বছরের তিন প্রৌঢ় ও যুবক আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যদিকে ডুঁয়া ১০/২ অন্তর্গত বালিচক এলাকায় একই পরিবারের ৫৩ ও ৩৮ বছরের মহিলা ছাড়াও আক্রান্ত হয়েছেন ৮১ বছরের এক বৃদ্ধ।
ডুঁয়া ১০/২ অঞ্চলের বালিচক অংশ ছাড়াও গৌরাঙ্গপুর এলাকায় ২ আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে যাঁরা ৪০ বছরের গৃহবধূ এবং ৬০ বছরের বৃদ্ধ।
সংক্রমনের দিক থেকে এরপরই রয়েছে ডেবরা সদরের দুটি গ্রামপঞ্চয়েত। ডেবরা ৫/২ অঞ্চলের হাইপাটে আক্রান্ত ৬৯ ও ৫৮ বছরের দম্পত্তি। দ্বারিকাপুর ও সীমানা সুভদ্রপুরে ৪৮ বছরের ব্যক্তি ও ২৩ বছরের যুবতী। ডেবরা ৫/১ কানুরামে একই পরিবারের ৪৪ বছরের গৃহবধূর সাথে আক্রান্ত ১৬ বছরের কিশোরীও।

আক্রমনের ভয়াবহতা সত্যপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও। সত্যপুর অঞ্চলের তেঘরি গ্রামে ৫৬ বছরের প্রৌঢ়, ২৯ বছরের যুবক ও ১৩ বছরের কিশোর আক্রান্ত হয়েছেন। সত্যপুরের চকমানু ও আবদালিপুরে ৪০বছরের মহিলা ও ৩৫ বছরের যুবক আক্রান্ত। খানামোহন গ্রামপঞ্চায়েতের চকবাহাদুরে ২৫ ও ২৩ বছরের দম্পত্তি আক্রান্ত। অন্যদিকে ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীকৃষ্ণপুরে ৪২ বছরের এক ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে। ১১/২ রাধামোহনপুরের সদরে ৫৯ ও ৪৫ বছরের এক দম্পত্তি আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে শুধু ডেবরার ঠিকানা দেওয়া ৪৫ বছরের এক গৃহবধূর শরীরে করোনার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে।
এদিকে সংক্রমনের প্রবনতা বাড়তে থাকায় ডেবরা বাজার, বালিচক সহ বিভিন্ন জনবহুল এলাকা ও রাস্তায় নজরদারি শুরু করেছে ডেবরা পুলিশ। মাস্কহীন মানুষ দেখলেই থামিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। উপযুক্ত কারন দর্শাতে না পারলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। মাস্ক বিহীন বাইক আটক করলে মামলা দেওয়া হচ্ছে। পুজো অবধি ব্যাপক তল্লাশির পাশাপাশি ডেবরা উড়ালপুল ও সংলগ্ন বাজার এলাকায় সিসিটিভি বসাচ্ছে পুলিশ ।

RELATED ARTICLES

Most Popular