নিজস্ব সংবাদদাতা: একজন নয়, দু’দুজনের কোভিড-১৯ পজিটিভ বা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে দাসপুরে। আর তারপরেই উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা গ্রাস করেছে পর ভয়ে সিটিয়ে গেছে গোটা দাসপুরকে। মুম্বাই ফেরৎ সোনার কারিগর নিজামপুরের যুবকের পাঠানো নমুনা সোমবার রাতে পজিটিভ আসে আর বুধবার রাতে আসে তার বাবার পজিটিভ রিপোর্ট। স্বাভাবিক ভাবেই আতঙ্ক ছড়িয়েছে দাসপুর এবং সঙ্গে ঘাটালেও।
কারন ওই সোনার কাজ। হ্যাঁ, প্রশাসনিক সুত্রে খবর ভিন রাজ্যে সোনার কাজ করা দাসপুর ও ঘাটাল এলাকার প্রায় ১৫হাজার যুবক ফিরে এসেছে বিভিন্ন গ্রামে।
মঙ্গলবার সকালে দাসপুরের ওই নিজামপুর গ্রামের যুবকের করোনা পজিটিভ রিপোর্টের খবর ছড়িয়ে পড়ার পরই সকাল থেকেই রাস্তাঘাট ছিল সুনশান। বৃহস্পতিবার ফের তার বাবারও রিপোর্ট পজিটিভ। মানুষ হাড়ে হাড়ে বুঝতে শুরু করে যে করোনা রুগীর সংস্পর্শে এলে কী হতে পারে আর তারপরই দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামের মরিয়া যুবকরা নেমে পড়ে লকডাউন বলবৎ করার জন্য ।
অবাঞ্ছিত লোকের আনাগোনা এবং গ্রামের মানুষের অকারণ ঘোরাফেরা বন্ধ করতে ঘাটাল, দাসপুরের বিভিন্ন গ্রামে পথ আটকাচ্ছেন গ্রাম যুবক যুবতীরা।
বিভিন্ন জায়গায় পথ আটকানো যুবক যুবতির দল জানিয়েছেন, কলকাতা, হাওড়া থেকে বেশকিছু মানুষ পুলিশের হয়রানি এড়াতে জাতীয় ও রাজ্য সড়ক এড়িয়ে ইঞ্জিন ট্রলি ইত্যাদি করে দুর্বাচটি নদীঘাট পেরিয়ে ঘাটাল দাসপুরে ঢুকছেন।
বুধবার ঘাটাল থেকে দাসপুর-২ ব্লকের রানীচক যাওয়ার পথে রত্নেশ্বরবাটির কাছে রাস্তার উপর গাছের গুড়ি ফেলে পথচলতি গাড়ি ও মানুষকে আটকে রাস্তায় বেরোনোর কারণ জিজ্ঞাসা করছেন এলাকায় কয়েকজন যুবক-যুবতী। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কোন ভাবেই বেরোনো যাবেনা বলে সাবধানও করে দিচ্ছেন তাঁরা।
ঐ যুবকদের মধ্যে শপথ চক্রবর্তী নামে এক যুবক বলেন, ‘ঘাটাল, দাসপুর এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন। যারা অধিকাংশই স্বর্ণশিল্পের কাজ করেন। তারা লকডাউনের নিয়ম না মেনে, স্বাস্থ্য দপ্তর, পুলিশ-প্রশাসনের কোন কথা নাশুনে অনেকেই এখনো দল বেঁধে বেরিয়ে পড়ছে, আড্ডা দিচ্ছে। সন্ধ্যের পর তাসের আসর, পিকনিক করছে।
শপথ বলেন, নাকের ডগায় দাসপুরে এক যুবকের করোনা সংক্রমন ধরা পড়ার পরও অনেকে অকারনে বাইক, গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। তাই বুধবার সকাল থেকে আমরা স্থানীয় কয়েকজন যুবক রাস্তার উপর গাছের গুড়ি ফেলে পথ আটকে কারণ জানতে চাইছি। তিনি বলেন, মানুষকে সচেতন করার জন্যই আমরা এই পন্থা অবলম্বন করেছি’।