নিউজ ডেস্ক: রাজ্যে আরও বেলাগাম করোনা, একদিনেই আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়ালো ১৪ হাজারের বেশি। মৃত্যু ৫৯ জনের। এমতাবস্থায় বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ শতাংশ শয্যা করোনার চিকিৎসার জন্য সংরক্ষণের নির্দেশ দেওয়ার পাশাপাশি মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক করল রাজ্য সরকার। মাস্ক ছাড়া বাইরে বের হলেই বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে নির্দেশিকা জারি করেছে নবান্ন।
শনিবার রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘন্টায় রাজ্যে নতুন করে করোনা সংক্রমিত হয়েছেন ১৪ হাজার ২৮১ জন। গত ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ৫৯ জনের। এর মধ্যে কেবলমাত্র মহানগরীতেই করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৯৭০ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২০ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ২ হাজার ৮২১ জন এবং করোনার বলি হয়েছেন ১২ জন। এছাড়া, হাওড়াতে ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মালদহে ৫, নদিয়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৩ জন করে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে এই মুহূর্তে রাজ্যে করোনার ঘেরাটোপে পড়েছেন ৭,২৮,০৬১ জন এবং করোনায় মৃত্যু হয়েছে মোট ১০ হাজার ৮৮৪ জনের। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ৮১ হাজার ৩৭৫।
এমন কঠিন পরিস্থিতিতে বিভিন্ন হাসপাতালে বাড়তি শয্যা, অক্সিজেন সরবরাহ পর্যাপ্ত রাখার ব্যবস্থায় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য। আহমেদ ডেন্টাল কলেজে ১১২ ও মুকুন্দপুর আমরিতে ১১০টি শয্যার ব্যবস্থা হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালে ৬০ শতাংশ শয্যা করোনা রোগীর চিকিৎসার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত রোগীরাই যাতে হাসপাতালে শয্যা পান তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী। কোনওভাবে যেন তার একটাও অন্য কাজে ব্যবহার না হয় বা সংখ্যা কমিয়ে না দেওয়া হয় সেটাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলির ৪০ শতাংশ শয্যা রাখতে হবে আপাৎকালীন চিকিৎসা, ডে কেয়ার বেড, জরুরি অস্ত্রোপচার ও ডায়ালিসিসের জন্য বলে জানানো হয়েছে স্পষ্ট ভাবে।
সেই সঙ্গে, যে সব করোনা রোগীর অক্সিজেনের প্রয়োজন নেই তাঁদের জেনারেল ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা এবং যাঁদের জেনারেল ওয়ার্ডেও ভর্তি থাকার প্রয়োজন নেই তাদের ছুটি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজন ছাড়াই ভর্তি করা গুরুতর অপরাধ বলেও পোস্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এদিন স্বাস্থ্য অধিকর্তা। পাশাপাশি সিএমওএইচ ও হাসপাতালের সুপারদের রোজ সিসিইউ ও ওয়ার্ডে গিয়ে সরেজমিনে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী।
শুধু তাই-ই নয়, অসচেতন আমজনতার হুঁশ ফেরাতে ধরপাকড়ের সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশিকাও জারি করেছে নবান্ন। রাজ্যের মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে জারি করা নির্দেশে বলা হয়েছে, ‘বাড়ির বাইরে বেরোনোর সময় মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক। জনসমক্ষে কাজের জন্য কেউ বাইরে বের হলে মাস্ক পড়া ও শারীরিক দূরত্ববিধি মেনে চলতে হবে।‘ কেউ মাস্ক না পরলে বা সামাজিক দূরত্ববিধি না মেনে চললে পুলিশকে তাদের বিরুদ্ধে বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। কলকাতা ও রাজ্য পুলিশকে এই মর্মেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিবের পক্ষ থেকে।