নিজস্ব সংবাদদাতা: আর মাত্র ৭২ ঘন্টা!পূর্ন হতে চলেছে মাওবাদীদের শীর্ষ নেতা কিষানজীর মৃত্যুর এক দশক পূর্তি। ২০১১ র ২৪শে নভেম্বর, জঙ্গলমহল শুনেছিল মাওবাদীদের শীর্ষ নেতা কিষানজী নিহত হয়েছেন পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে।জামবনী থানার বুড়িশোলের জঙ্গলের সেই দিনটার আগে বরাবরই অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে ওঠে মাওবাদীরা। চেষ্টা করে বদলা নেওয়ার, নাশকতার। বেশ কয়েক বছর ততটা সক্রিয় হতে পারেনি মাওবাদীরা। কিন্তু ইদানিং অল্পবিস্তর উপস্থিতি মিলছে তাদের। তারই মধ্যে ক্যাম্প গোটালো কেন্দ্রীয় বাহিনীর দুই ব্যাটালিয়ন।
মাস খানেক আগেই এই বুড়িশোল এলাকাতেই মিলেছে মাওবাদীদের নামাঙ্কিত পোষ্টার। এ বছর তাই ঝুঁকি একটু আছেই ঠিক এমনই সময় জঙ্গল ছাড়ল কেন্দ্রীয় বাহিনীর ২টি ব্যাটালিয়ন, যাতে ১৪টি কোম্পানি ছিল এবং সব মিলিয়ে প্রায় ১৪০০জওয়ান। শুক্রবার রাতে তাঁরা পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রাম স্টেশন থেকে বিশেষ ট্রেনে রওনা দিয়েছেন ছত্তিশগড়ের উদ্দেশ্যে।
শুধু মাওবাদী ঝুঁকি নয়। মাথার ওপর রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচন। ফলে আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নটি এখন যথেষ্টই গুরুত্বপূর্ণ। সেই সময় জঙ্গলমহলের সব ভার রাজ্য পুলিশের মাথায় চাপিয়ে কেন জঙ্গলমহল ছাড়ল কেন্দ্রীয় বাহিনী, এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা।
তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এই সিদ্ধান্তের পিছনে রাজনৈতিক অভিসন্ধি রয়েছে। এদিকে, কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকা ছড়ায় এবার চাপ বাড়ল রাজ্য পুলিশের। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া জঙ্গলমহলের দুই জেলা পুরুলিয়া ও ঝাড়গ্রামে ওই শিবিরগুলির দায়িত্ব আপাতত নেবে রাজ্য পুলিশ
প্রতি বছর ২৪ নভেম্বর কিষাণজির মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেশের প্রত্যেকটি মাওবাদী প্রভাবিত রাজ্যগুলিতে শহিদ সপ্তাহ পালন করে সিপিআই (মাওবাদী)। তাঁদের কিছু নির্দিষ্ট কর্মসূচিও থাকে। আর এমন সয় কেন্দ্রীয় বাহিনী এলাকা ছাড়ায় অনেকটাই বিপাকে পড়ল রাজ্য পুলিশ। এ ব্যপারে রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী তথা পুরুলিয়া জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান শান্তিরাম মাহাতো বলেন, ‘হঠাৎ করে এভাবে দুই ব্যাটেলিয়নের ১৪ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী তুলে নেওয়ার পেছনে রাজনীতি রয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনের আগে জঙ্গলমহলের পরিবেশকে অশান্ত করতে চাইছে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার।’
ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও বীরভূম বর্তমানে জঙ্গলমহলের এই এলাকা মিলিয়ে কোবরা ছাড়া সিআরপিএফের মোট ৭টি ব্যাটেলিয়ন ছিল। দুটি ব্যাটেলিয়ন চলে যাওয়ায় এখন জঙ্গলমহলে রইল ৫ ব্যাটেলিয়ন কেন্দ্রীয় বাহিনী। পশ্চিম মেদিনীপুরকে মাওবাদী মুক্ত জেলা ঘোষণার পর এই জেলায় কোনও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন নেই। শালবনীর কোবরা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও মহিলা বাহিনীর একটি অংশ থাকলেও তাঁরা জঙ্গলমহলের ওই চারটি জেলাতেই কর্তব্যরত।