ওয়েব ডেস্ক : করোনাই আসুক কিংবা অন্য কোনো রোগ, বাঙালি যেখানে টাকা রোজগারের সুযোগ পাবে তাতে সদ্ব্যবহার করবে চিরজীবন। এই ভয়ঙ্কর মহমারিতেও তার অন্যথা হচ্ছে না। স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী, করোনা থেকে বাঁচতে গেলে সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি একমাত্র উপায় প্রত্যেকের মাস্ক ব্যবহার বাধ্যতামূলক। ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাস্ক কিনতেই হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। আর সেই সুযোগে একটি মাস্ক বিক্রি করে কমপক্ষে ১০ থেকে ১৫ গুণ লাভের মুখ দেখছেন খুচরো মাস্ক ব্যবসায়ীরা।
রাস্তায় বেরোলেই দেখা যায় একটু নিম্নবিত্ত শ্রেনী, যারা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষ, কিংবা ঠেলাওয়ালা, রিক্সাওয়ালা, শ্রমিক মানুষগুলোর মুখের দিকে একটু লক্ষ্য করলেই দেখা যায়, তাদের মুখের মাস্কগুলো নোংরা হয়ে গিয়েছে। ওই নোংরা মাস্ক থেকে তাঁদের শরীরে সংক্রমণ ছড়াতেই পারে৷ কিন্তু কেন তারা অসচেতনভাবে নোংরা মাস্কগুকি পড়ে রয়েছেন, জিজ্ঞেস করলেই তাদের একটাই উত্তর,” মাস্ক রোজ কেনার টাকা নেই, ১০-১৫ টাকা লাগে কিনতে। লকডাউন এ রোজগার একেবারে তলানীতে, খাবারের টাকা জোগার হয় না তার ওপর আবার মাস্ক কিনতে গেলে খাব কি?”
এমনিতেই বাজারে খুবই অসচেতনভাবে মাস্কগুলি বিক্রি করা হচ্ছে। তারওপর আবার ইদানীং পোশাকের সাথে সামঞ্জস্য রেখে যে সমস্ত রঙবেরঙের মাস্ক ব্যবহার করা হচ্ছে তার মধ্যে বেশিরভাগই কোনও কাজের নয়। নীল রঙের যে সার্জিক্যাল মাস্কগুলি বিক্রি হচ্ছে, সেগুলি খুচরো বিক্রেতারা দাম নিচ্ছেন প্রায় ১০টাকা। ওষুধের দোকানে সেই মাস্কেরই দাম আবার ২০ টাকা। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আবার ২৫ টাকা দামেও বিক্রি করছেন বিক্রেতারা। কিন্তু আদতে এই মাস্ক গুলো পাইকারি দরে কেনা হচ্ছে মাত্র ১ টাকা ২০ পয়সায়৷ এখানেই উঠছে প্রশ্ন। তাহলে কিভাবে খোলা বাজারে এত চড়া দামে সেই মাস্কগুলি বিক্রি করছেন বিক্রেতারা?
আসলে কয়েকমাস আগে পর্যন্তও মানুষের মধ্যে সেভাবে মাস্ক ব্যাবহারের প্রবণতা ছিলনা। ফলে মাস্ক বিক্রির ক্ষেত্রে সরকারের সে রকম কোনও নিয়ন্ত্রণ পরিকল্পনাও এখনও পর্যন্ত শুরু হয়নি। এর জেরে মাস্কের লাগামছাড়া দামে অনেকক্ষেত্রেই টাকার অভাবে অনেকেই এখনও পর্যন্ত রুমাল কিংবা গামছাই ব্যাবহার করে চলেছেন। বেশিরভাগ মানুষের দাবি, মাস্ক যেখানে সবাইকে ব্যবহার করতেই হবে, সেখানে মাস্কের দামের উপর লাগাম টানা খুবই প্রয়োজন। এর ফলে উপকৃত হবেন সাধারণ মানুষ এবং মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত মানুষেরা।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, যেভাবে গোষ্ঠী সংক্রমণ শুরু হয়েছে, সেখানে করোনা আটকাতে গেলে মাস্কের ব্যবহার এবং অবশ্যই এর গুণগতমানের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে সরকারকে। একইসাথে যেহেতু সংক্রমণ ঠেকাতে মাস্কের ব্যবহার করা হচ্ছে সেহেতু যেখানে সেখানে রেখে যে ভাবে মাস্ক বিক্রি করা হচ্ছে, তাতে সংক্রমণের সম্ভাবনা কমার চেয়ে বাড়ার আশঙ্কা বহুগুণ বেশী৷