নিউজ ডেস্ক: কে যে কাকে সান্তনা দেবে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। কেউ হারিয়েছেন তিন দিনের সন্তানকে, কেউ বা ১মাসের। কেউ দীর্ঘ ১২বছরের বিবাহিত জীবনে প্রথম সন্তানের মুখ দেখেছিল কারও আবার প্রথম পুত্র সন্তান। হাসপাতালের ১৭জন নব জাতকের ১০জনই মৃত, বাকিদের অনেকের অবস্থা খারাপ। এমনই হাহাকার ভরা চিত্র মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা জেলা জেনারেল হাসপাতালে। জেলা হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডাঃ প্রমোদ খাণ্ডাতে জানান, শিশুদের ওয়ার্ডে ১৭ জন নবজাতকদের রাখা হয়েছিল। শনিবার গভীর রাতে একজন নার্স এই ওয়ার্ড থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন, যার পরে এই ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসে।
জানা গিয়েছে, সদ্যোজাতদের সুস্থ করে তোলার সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিটে (এসএনসিইউ) আগুন লাগে। যার জেরে বেঘোরে প্রাণ হারায় ১০ জন সদ্যজাত। ১ দিন থেকে ৩ মাস বয়সী ১০ শিশুর প্রাণ গিয়েছে এই মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে রাত ২টা নাগাদ আগুন লাগে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, শর্ট সার্কিট থেকে এই অগ্নিকাণ্ড।
হাসপাতালের কর্মরত নার্স হঠাৎই গভীর রাতে সিক নিউবর্ন কেয়ার ইউনিট থেকে ধোঁয়া বেরোতে দেখেন। এরপর তিনি অন্যান্যদের খবর দেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ফায়ার ব্রিগেড। এরপরই ফায়ারর ব্রিগেদ ও হাসপাতালের কর্মীরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালান সদ্যোজাতদের প্রাণ বাঁচানোর। তবে দুর্ভাগ্যবশত, ১০ জনকে বাঁচানো যায়নি।
মর্মান্তিক এই ঘটনা নিয়ে দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরে। ট্যুইটে প্রধামন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লেখেন, ‘মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারায় যা হয়েছে তা হৃদয় বিদারক। বেশ কয়েকটি মূল্যবান প্রাণ হারিয়েছি আমরা। সদ্যোজাতহারা পরিবারদের প্রতি সমবেদনা জানাই। আশা রাখি, যারা আহত হয়েছে, তারা দ্রুত সেরে উঠবে।’
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঘটনার খবর পেয়েই রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজেশ তোপের সঙ্গে কথা বলেন উদ্ধব ঠাকরে। গোটা ঘটনার দ্রুত তদন্ত শুরু করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কংগ্রেসের নেতা রাহুল গান্ধীও দুঃখপ্রকাশ করেন। অমিত শাহ ট্যুইটারে লেখেন, ‘ভাণ্ডারা ডিসট্রিক্ট জেনারেল হাসপাতালের দুর্ঘটনা অত্যন্ত বেদনাদায়ক। দুঃখপ্রকাশের ভাষা নেই। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। যে পরিবারগুলোর, তাদের প্রতি সমবেদনা জানাই, আশা রাখি ঈশ্বর তাদের এই শোক কাটিয়ে ওঠার শক্তি দিন।’
রাহুল লেখেন, ‘মহারাষ্ট্রের ভাণ্ডারা ডিসট্রিক্ট জেনারেল হাসপাতালের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। যে পরিবারগুলো তাদের শিশুদের হারালেন তাদের প্রতি সমবেদনা রইল। মহারাষ্ট্র সরকারের কাছে আবেদন করব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে।’যদিও আগুন লাগার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়, তবে শর্ট সার্কিট থেকেই এই অগ্নিকাণ্ডে ঘটনা মনে করা হচ্ছে, কেউ কেউ আবার এটিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের গাফিলতিও মনে করছেন।