নিজস্ব সংবাদদাতা: ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে ফের বাংলায় করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির হদিস মিলল। এবারও সেই মহানগর। বাইপাস লাগোয়া একটি হাসপাতালে ভর্তি এক ব্যক্তির শরীরে পাওয়া গেল কোভিড-১৯। বুধবার গভীর রাতে সারাদিনের করোনা সংক্রমণের খবর না পাওয়ার স্বস্তি অনেকটাই দুঃশ্চিন্তায় পরিণত হল রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের কাছে। বাইপাস সংলগ্ন শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে খোঁজ মিলল রাজ্যের ১০ম করোনা আক্রান্তের। নাইসেডে করোনা পরীক্ষায় ওই ব্যক্তির রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। সূত্রের খবর, ৬৬ বছরের ওই করোনা আক্রান্ত নয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা।
সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ওই ব্যক্তি বা তাঁর পরিজনরা হাসপাতালকে জানানো ডিক্লারেশন ফর্মে কোনও বিদেশ যাত্রার উল্লেখ করেননি। উল্লেখ করা হয়নি করোনা উপদ্রুত কোনও রাজ্যে যাওয়ার কথাও। ফলে রাজ্যের ১০ম কোভিড-১৯ আক্রান্ত কি গোষ্ঠী সংক্রমণের শিকার? এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি রাতেই ভাবাতে শুরু করেছে স্বাস্থ্যভবনের কর্তাদের। যদিও তাঁদের একাংশ মনে করছেন আক্রান্তের বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করলে হয়তো দমদমের মৃত ব্যক্তির মতো কোনও না কোনওভাবে তাঁর করোনা যোগের খোঁজ মিলবে। উল্লেখ্য, করোনায় মৃত দমদমের প্রৌঢ়ের গোষ্ঠী সংক্রমণের আশঙ্কা করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তাঁর জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে করে মহারাষ্ট্রের ভ্রমণ যোগ সেই সম্ভাবনাকে অনেকটাই নাকচ করে দেয়।
অন্যদিকে সারা দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এ বার তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ ও গুজরাতে। ফলে করোনায় দেশে মৃতের মোট সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৩। যদিও রাত পর্যন্ত স্বাস্থ্য মন্ত্রকের হিসেবে মৃতের সংখ্যা ১০ রয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানাচ্ছে, আজ পর্যন্ত ভারতে মোট করোনা-সংক্রমিতের সংখ্যা ৬০৬। ৪২ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর হিসেবে সংক্রমণের সংখ্যা অবশ্য ৫৮১। সংক্রমিতের সংখ্যায় মহারাষ্ট্রকে (১২২) ক্রমশ ছুঁয়ে ফেলছে কেরল (১১২)। দিল্লিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছে।
করোনায় গুজরাতে এটি দ্বিতীয় মৃত্যু, তামিলনাড়ু ও মধ্যপ্রদেশে প্রথম। মাদুরাইয়ের রাজাজি হাসপাতালে আজ ভোরে ৫৪ বছরের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সি বিজয়ভাস্কর জানিয়েছেন, ডায়াবিটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও অনিয়মিত হৃৎস্পন্দনের সমস্যা ছিল প্রৌঢ়ের। বিকেলের দিকে মধ্যপ্রদেশের ইনদওরে সরকারি হাসপাতালে মারা যান ৬৫ বছরের এক বৃদ্ধা। তাঁর বাড়ি উজ্জয়িনীতে। সেখানকার হাসপাতালেই তাঁর প্রাথমিক চিকিৎসা হয়েছিল। রাতে আমদাবাদে ৮৫ বছরের এক বৃদ্ধা মারা যান। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সম্প্রতি বিদেশে গিয়েছিলেন বৃদ্ধা। করোনায় লক্ষণ দেখা দেওয়ায় সরকারি হাসপতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। আরও কিছু শারীরিক জটিলতাও ছিল তাঁর।
এ ছাড়া, দিল্লির একটি মৃত্যুর ক্ষেত্রে করোনা-সংক্রমণ সন্দেহ করা হচ্ছিল। কিন্তু মৃত ব্যক্তির করোনা-পরীক্ষার দ্বিতীয় রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। দেশ জুড়ে বিভিন্ন আধাসামরিক বাহিনীর ৩২টি হাসপাতালের প্রায় ১৯০০ শয্যা এবং অর্ডন্যান্স ফ্যাক্টরি বোর্ডের বিভিন্ন হাসপাতালের ২৮৫টি শয্যা কোভিড-১৯ রোগীদের চিকিৎসা ও আইসোলেশনের জন্য রাখা হচ্ছে। হিমাচলের হামিরপুর জেলা প্রশাসন আইসোলেশন সেন্টার তৈরির জন্য এনআইটি-র ১০টি হস্টেলের ২০০০ ঘর নিয়ে রেখেছে।