নিজস্ব সংবাদদাতা: যুক্তির চেয়ে গ্রাস করেছে বেশি আতঙ্ক আর আতঙ্ক ডেকে আনছে কুসংস্কার আর সেই কুসংস্কারের বশে কোথাও পোড়াতে দেওয়া হচ্ছেনা হৃদরুগীর মৃতদেহ তো কোথাও আটকে রাখা হচ্ছে মুরগির খাদ্য নিয়ে আসা চালক খালাসীদের। সোমবার দিন ভর এরকমই কান্ড দেখল খড়গপুর মেদিনীপুর শালবনী। করোনার আতঙ্কে মানু্ষের মধ্যে গেঁথে বসা অজ্ঞানতার মাশুল দিতে হচ্ছে অসহায় মানুষকেই। মরার পরও নিজের গ্রামে সৎকার হওয়ার সু্যোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। বহু ক্ষেত্রেই মানু্ষের এই অজ্ঞানতার রুদ্র রূপের কাছে অসহায় হয়ে পড়ছে পুলিশ, প্রশাসন।
এদিনের প্রথম ঘটনার স্বাক্ষী পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়গপুর ১ ব্লকের হরিয়াতাড়া গ্রাম। এই গ্রামের বাসিন্দা ৪৫ বছরের গৃহবধূ মীরা মাহাতের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় গত শুক্রবার, ব্যাঙ্গালুরুর একটি বেসরকারি হাসপাতালে। মীরার ছেলে রাজু, পুত্রবধূ একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে মৃতদেহ নিয়ে আসে গ্রামে। সঙ্গে চিকিৎসকের ডেথ সর্টিফিকেট যাতে স্পষ্ট লেখা যে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই মৃত্যু হয়েছে মীরা মাহাতের। গ্রামে ঢোকার মুখেই মৃতের পরিবার দেখে গ্রামের রাস্তা বাঁশ লাঠি ইত্যাদি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। গ্রামের লোক পরিষ্কার জানিয়ে দেয় যে করোনা আক্রান্ত ওই মৃতের দেহ গ্রামে প্রবেশ করতেই দেওয়া হবেনা।
এরপর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয় খড়গপুরের একটি শ্মশানে কিন্তু সেখানেও ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে পরিবারের আভিযোগ। পরিবার এবার অ্যাম্বুলেন্সে করেই মৃতদেহ নিয়ে রওনা দেয় মেদিনীপুর পদ্মাবতী শ্মশান ঘাটে। কিন্তু আভিযোগ ডেথ সার্টিফিকেট দেখানো সত্বেও মেদিনীপুর পদ্মাবতী শ্মশান ঘাট থেকে দেহ সহ ফিরিয়ে দেওয়া হয় পরিজনদের। এরপরই সেই দেহ নিয়ে সোজা পরিজনেরা পৌঁছায় মেদিনীপুর কোতোয়ালী থানায়। বিকাল অবধি সেখানেই পড়ে থাকে অ্যাম্বুলেন্স সহ মৃতদেহ। পরে পুলিশের উদ্যোগে গ্রামের থেকে কিছুটা দুরে একটি জঙ্গলে সৎকার করা হয় দেহের।
দ্বিতীয় ঘটনা শালবনী থানার ভাউদিতে। স্থানীয় একটি পোল্ট্রি ফার্মের জন্য মুরগি খাদ্য নিয়ে এসে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে আটকে পড়ে গাড়ির চালক ও কয়েকজন খালাসী। গ্রামবাসীরা দাবি করছেন ভিন রাজ্য থেকে করোনা ভাইরাস নিয়ে এসেছে ওই চালক খালাসীরা। তাঁদের ২১দিন ওই ফার্মেই আটকে থাকতে হবে বলে গ্রামবাসীরা ফার্ম ঘিরে রেখেছেন। পুলিশ চেষ্টা করছেন তাঁদের মুক্ত করার।